মলয় দে নদীয়া :- নদীয়ার শান্তিপুরের গুপিনাথ ঠাকুর লেনের নতুনপাড়ার বাসিন্দা ঝন্টু শেখের স্ত্রী প্রসূতি উর্মিলা বিবি গত ২৭ শে জানুয়ারি শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে এক কন্যা সন্তান প্রসবকে কেন্দ্র করে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ, শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে গত ২৭ জানুয়ারি উর্মিলা বিবির সন্তান প্রসব করানোর সময় তার সন্তানের ওজন ৪ কেজি ১৭৬ গ্রাম হওয়া সত্ত্বেও সিজার না করে দীর্ঘ এক ঘন্টা যাবৎ নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করেছেন ওই হাসপাতালের গাইনোকোলজিস্ট সবুজ বরণ বিশ্বাস। সন্তান প্রসব করানোর পরেই সদ্যোজাত শিশুকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন, অথচ দুই হাত ও শরীরের অন্যান্য অংশে আঘাত লাগা সত্ত্বেও পরিবার কে জানানো হয়নি সেই সময়। ঘাটে পৌঁছানোর পর শারীরিক পরিস্থিতি আরো খারাপ হওয়ায় সেখান থেকে শিশুটিকে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে। এরপর সেখান থেকে মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। এভাবেই এক মাস যাবৎ হাসপাতালে ঘোরার পরেও, নবজাতকের আগামী দিনে ভাঙ্গা হাত ঠিক হবে কিনা তা জানাতে পারিনি চিকিৎসকরা, অন্যদিকে ঘটনার বিষয়ে রোগীর পরিবার কাছে, ভুল চিকিৎসার কথা জানিয়েছেন তারা।
উর্মিলা বিবির অভিযোগ,’তার কন্যা সন্তানের ভুল চিকিৎসার কারণে প্রসব করানোর সময় তার সন্তানের একটি হাত ভেঙে গিয়েছে।তার বুকে, মাথায় ও ঘাড়ে আঘাত রয়েছে।তার সন্তানের একটি হাত পঙ্গু হয়ে গিয়েছে।শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্য চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে।তিনি শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের সুপারের কাছে বৃহস্পতিবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি অভিযুক্ত ওই চিকিৎসকের শাস্তি চান।
উর্মিলা বিবির যা, মর্জিনা বিবি বলেন আমরাও সন্তানের মা, তবে সেদিন ওর মা যে কষ্ট পেয়েছে তার চোখের সামনে দেখা যায় না। অন্যদিকে বাচ্চার ক্ষতিপূরণ কে দেবে? তার ওপর কন্যা সন্তান। ডাক্তারের শাস্তির দাবি করেছেন তিনি।
ঝন্টু শেখ বলেন, অপরের মাংসের দোকানে কর্মচারী, সামান্য যা কিছু হয় তা দিয়ে, আট বছর বয়সী মেয়ের পড়াশোনা চালানো, এবং সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি ,তার উপর সদ্যজাত বাচ্চা কে নিয়ে হাসপাতাল বাড়ি করতে দেনাদার হয়ে পড়েছি।
‘যদিও এই বিষয়ে অভিযুক্ত ওই চিকিৎসকের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের সুপার ডা: তারক বর্মন জানিয়েছেন,’আমরা শিশুটির মায়ের একটি অভিযোগ পেয়েছি। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই তদন্ত কমিটি রিপোর্ট অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’যদিও শিশুটিকে জোর করে নরমাল ডেলিভারি করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ তুলেছেন বাড়ির লোকজন ,সেই বিষয়ে সুপারের বক্তব্য,’পেশেন্টের অবস্থা ঠিক থাকলে আমরা নরমাল ডেলিভারি করাই চেষ্টা করি।’
শিশুটি জন্মানোর পরেই সঙ্গে সঙ্গে তাকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা প্রসঙ্গে সুপারের বক্তব্য,’আমাদের এটা এখানে সদ্যোজাত শিশুদের রাখার জন্য এস এন সি ইউ নেই। শিশুটি শ্বাসকষ্ট ছিল। তাই এস এন সি ইউর সুবিধা পাওয়ার জন্য রানাঘাট হাসপাতালে তাকে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।’