দ্যা ফ্রেমের নজর কাড়া শিল্পকর্মে মুগ্ধ মহানগরী

Social

প্রীতম ভট্টাচার্য : চর্চা, ভালোবাসা রেওয়াজের বহিপ্রকাশ দ্যা ফ্রেমের শিল্পকর্ম, মুগ্ধ শিল্পঅনুরাগী থেকে শিল্পসমালোচক। কলকাতায় শিল্পী দলের যে ইতিহাস দেখা যায় সেইখানে অনেক শিল্প দল তাদের মত করে নিজেদের চর্চায় আজ দীর্ঘ পথ অতিক্রম করেছে , তেমনি একটি শিল্পী দল The Frame যাঁরা কলকাতার পাশাপাশি দিল্লী, ভূপাল বা মুম্বাই এ তাদের শিল্প প্রদর্শনী করার মধ্যে দিয়ে ত্রিশ বছরের এক যাত্রা পথ গড়ে তুলেছে । আর্ট কলেজের সদ্য পাশ করা একদল শিল্পী বন্ধুদের গড়ে তোলা দল আজ তিন দশক পার করেছে যাদের প্রাণ কেন্দ্র শুধুই শিল্পকলা। এই যাত্রাপথ কমদিনের নয় এবং যার উদযাপন তারা একটি চিত্র – ভাস্কর্যের প্রদর্শনীর মাধ্যমে আয়োজন করেছে । এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে চারুবাসনা ( যোগেন চৌধুরী সেন্টার ফর আর্টস) এবং উদ্বোধনে ছিলেন যোগেন চৌধুরী ও সুশোভন অধিকারী। এই দলের সদস্যরা আরুনাংশু রায়, বিভূতি চক্রবর্তী , বিশ্বজিৎ সাহা , দেবাশীষ সামন্ত, জয়ন্ত ভট্টাচার্য, প্রাণ গোপাল ঘোষ, রবীন রায়, সিতাংশু মণ্ডল, শেখর বরণ কর্মকার, সৌমিত্র কর, শুভ্র কুমার ব্যানার্জী, সুমিতাভ পাল , স্বপন কুমার মল্লিক।

প্রদর্শনীর সূচনা ১৩ ই আগস্ট হয়েছে এবং চলছে ২৮ সে আগস্ট পর্যন্ত। এই প্রদর্শনীতে প্রত্যেকে তাদের শিল্প কর্মের প্রতি যে আত্মনিবেশ তা তাদের কাজের মাধ্যমেই ফুটিয়ে তুলেছে । সৌমিত্র করের এবং দেবাশীষ সামন্তের টেম্পেরা তে করা ছবির কিংবা অ্যাক্রিলিক এর ব্যাবহার চোখে পড়ার মতো কাজ প্রাণ গোপাল ঘোষ বা অরুনাশু রয়ের। শেখর বরণ কর্মকারের জল রং এর মানব শরীর যেমন অন্য মাত্রার পশাপাশি সিতাংশু মণ্ডল এর জল রঙের গ্রামীণ বর্ণনা যা চাষী দের রোজ নামচার কথা বলে । শুভ্র কুমার ব্যানার্জী তার রঙিন হাসি দিয়ে যে গল্পঃ বলতে চেয়েছে তার ছায়া এসে পড়েছে জয়ন্ত ভট্টাচার্য এর ভাস্কর্যের মধ্যে।

বিভূতি চক্রবর্ত্তী তার কালি কলকমে যে শহর তলির রূপ দেখিয়েছে তার সুর গিয়ে মিশেছে বিশ্বজিৎ সাহা র চারকোল এ করা কভিড সময়ের প্রতিচ্ছবি তে। রবীন রয়ের কালি দিয়ে করা রেখা চিত্রে যে আর্তনাদ আছে তা স্পষ্ট শোনা যায় ছবির সামনে দাঁড়ালে। সুমিতাভ পালের হাতের বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে আর্থ সামাজিক যে পরিস্থিতির কথা বলেছেন তা সহজেই বোঝা যায়। আবার স্বপন কুমার মল্লিকের কালি দিয়ে রেখা নির্ভর ছবিতে দেখা মেলে মানব জীবনের রিপুর ভিন্নতা। সব মিলিয়ে প্রদর্শনীর সকল শিল্পী তাদের নিজ আঙ্গিকে যে ভাষায় তাদের কাজ করে চলেছে তা এই সময়ের শিল্প চর্চা কে নানা দিক দিয়ে সমৃদ্ধ করেছে। তাদের এই প্রদর্শনীর আরেকটি আয়োজন হিসাবে একদিনের শিল্প আড্ডায় ছিলেন বরিষ্ঠ শিল্পী গণেশ হলোই , যোগেন চৌধুরী এবং সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় যাঁরা তাদের আলোচনায় তুলে ধরেছিলেন বর্তমান সমেয়ের আধুনিক শিল্পকলার গতিপ্রকৃতি নিয়ে তাদের মতামত। শিল্পী দলের এই রূপ নানান কার্য কর্মের সাথে যুক্ত থেকে তাদের দীর্ঘ ৩০ বছরের যে অভিজ্ঞতার ভান্ডার দিন দিন বাড়ছে তা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য হবে এক উজ্জ্বল নিদর্শন। কলকাতার শিল্পী দলের ইতিহাস পর্যলোচনায় যেমন এই দলের উল্লেখ যোগ্য ভূমিকা থাকবে পাশাপাশি তাদের এই দিন গুলোও অবশ্যই স্বর্নাক্ষরে লেখা হবে বলেই সকল শিল্প রসিক মানুষ রা মনে করেন ।

Leave a Reply