মলয় দে নদীয়া:-রামমোহন রায় ১৭৭২ খ্রিস্ট্রাব্দের ২২ মে হুগলী জেলার রাধানগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বংশে অদ্ভুত বৈপরীত্য লক্ষ্য করা যায়। তাঁর প্রপিতামহ কৃষ্ণকান্ত ফারুখশিয়ারের আমলে বাংলার সুবেদারের আমিনের কাজ করতেন। সেই সূত্রেই এদের ‘রায়’ পদবীর ব্যবহার। কৃষ্ণকান্তের কনিষ্ঠ পুত্র ব্রজবিনোদ রামমোহনের পিতামহ। পিতা রামকান্ত।
রামকান্তের তিন বিবাহ। মধ্যমা পত্নী তারিণীর এক কন্যা ও দুই পুত্র-জগমোহন ও রামমোহন। এঁদের বংশ ছিল বৈষ্ণব, কিন্তু রামমোহনের মাতা ছিলেন ঘোর তান্ত্রিক ঘরের কন্যা। রামকান্ত পৈত্রিক বাড়ি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী লাঙ্গুলপাড়া গ্রামে স্ব-পরিবারে উঠে যান। রামাকান্ত রায় এবং তারিণী দেবীর সন্তান রামমোহন খুবই মেধাবী ছিলেন। তিনি সংস্কৃত, আরবী, উর্দু, ফারসী ও ইংরেজি ভাষায় পণ্ডিত ছিলেন। এ ছাড়া হিব্রু, গ্রিক ও সিরীয় প্রভৃতি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন। ইসলাম, খ্রিষ্ট ও বৌদ্ধ ধর্ম সম্পর্কে তার গভীর জ্ঞান ছিল। তিনি হিন্দুধর্মের ধর্মগ্রন্থগুলো গভীর মনোযোগের সঙ্গে অধ্যয়ন করেন এবং ইসলাম ধর্মতত্ত্ব ও আইনশাস্ত্রে যথেষ্ট জ্ঞান অর্জন করেন। প্রথম যৌবনেই তিনি অ্যারিস্টটলের যুক্তিবিদ্যা এবং ইউক্লিডের মূলনীতিগুলো পাঠ করেন। এ গ্রন্থাবলি অধ্যয়নের ফলে তাঁর ভেতরে যুক্তিবাদিতা ও সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গির জন্ম হয়। এ সময়ই তিনি ইসলাম ও হিন্দুধর্মের মধ্যে তুলনামূলক বিচার-বিশ্লেষণ করতে আরম্ভ করেন। পারস্যের সুফি মরমিয়া কবিদের কাব্য পাঠও তাঁর মনোজগতে ব্যাপক পরিবর্তন আনে।
এমনই জানা না জানা নানান তথ্য আজ উঠে আসলো রানাঘাট পৌরসভা আয়োজিত রামমোহন রায়ের জন্ম দিবসে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন এর পাশাপাশি বিভিন্ন আলোচনা থেকে।