নদীয়ায় পাঁচশ বছরের বেশি লাল তেঁতুল গাছ ঘিরে রয়েছে অন্ধ বিশ্বাস ও নানান অলৌকিক কাহিনী, পোশাকি নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে আজগুবি তলা। তবে বিজ্ঞান বলছে অন্য কথা

Social

মলয় দে নদীয়া:- তেঁতুল খেতে কে না পছন্দ করে? ছোট বড় সবার, তেঁতুল দেখলেই জিভে জল চলে আসে। আচ্ছা, কখনো কি দেখেছেন এমন এক তেঁতুল যার রং লাল? সত্যিই অবাক করার মতোই লাল রঙা তেঁতুল। আমরা সাধারণত তেঁতুলের ভেতরের অংশ কাঁচা অবস্থায় সাদা পাকায় কালচে মেরুন রঙেরই দেখে থাকি। কিন্তু এই তেঁতুলের বাইরের দিকটাও সাধারণ সবুজ হলেও কাঁচা হোক পাকা এক্কেবারে লাল টুকটুকে। । বিষ্ময়কর এই তেঁতুল নিয়ে মানুষের জল্পনা কল্পনারও শেষ নেই। আর তাইতো একদল মানুষ এই সিঁদুর রঙা তেঁতুলের অলৌকিক গুণ রয়েছে বলে ভাবে। তাদের ধারণা, এই তেঁতুল পরম সৌভাগ্যের প্রতীক। মনোবাসনা পূরণে এই তেঁতুল কার্যকরী!

নদীয়ার পাল পাড়ায় বট গাছের মতন বিশালাকৃতি তেঁতুল গাছের বয়স এলাকাবাসীরা আন্দাজ করেন ৫০০ বছরেরও বেশি। সে সময় মুসলমান সম্প্রদায়ের এক পীর সাহেব, এই গাছ লাগিয়ে তার নিচে ধর্মকথা এবং সেই সময়ের সমাজ ব্যবস্থা অনুযায়ী চিকিৎসার হাকিম আইনি পরিষেবার মোক্তার এবং কিছু অলৌকিক টোটকা নিতে মানুষ আসতেন দূর-দূরান্ত থেকে। এরপর তিনি মারা গেলে তার গুণমুগ্ধরা ওই গাছের গোড়াতেই সমাধিস্ত করেন তাঁকে। এরপর থেকে প্রতি শুক্রবার হিন্দুরা তাদের মনস্কামনা পূর্ণ হওয়ার বিশ্বাসে পুজো দিতে আসেন। অন্যদিকে মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ তার কবরস্থানে জিয়ারৎ করতে এসে দোয়া করেন আল্লাহর কাছে। আর এই কারনেই এই খানকার পোশাকি নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে আজগুবি তলা।

বিজ্ঞানের কথায়, বিটা ক্যারোটিন নামক রঞ্জক পদার্থ থাকায় এই তেঁতুলের রং লাল‌ । একেবারেই যে দেখতে পাওয়া যায় না এমন নয়, বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলা খোকসা উপজেলায় হিজলাবট গ্রামে এই গাছ রয়েছে। তবে বিজ্ঞানের উন্নতি সাধনের পর বিশাল আকার গাছকে খর্ব করে একই বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে থাই ভ্যারাইটি সৃষ্টি করা হয়েছে লাল তেঁতুলের। যা চাইলেই আপনিও পারেন টবের মধ্যেই লাল তেঁতুল ফলাতে।

Leave a Reply