মলয় দে নদীয়া:- – বাবার বাড়ীর তীব্র ইচ্ছা কে অগ্রাহ্য করে নিজের বিয়েটা আটকাতে পারেনি সদ্য কৈশোরে পা দেওয়া মেয়েটি । “বিয়ে” শব্দের মানেটা ও সেদিন ঠিকঠাক বোঝেনি হয়তো ।” পিঠে ব্যাগ” আর হাতে “কলম” সেই স্বপ্ন ভুলে পিঠে সংসারের বোঝা আর হাতে রান্নার খুন্তি তুলে নিতে বাধ্য হয়েছিল নদীয়ার মুরুটিয়ার রানিমা খাতুন , বয়স ১৬ বছর স্বামী সাহারুল শেখ, । এই মেয়েটি এবছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।শত প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও স্বামী-সংসার সামলে পড়াশোনা করার তীব্র ইচ্ছেটা মনের মধ্যে দিয়ে জিইয়ে রেখেছিল । লকডাউন পরিস্থিতি খানিকটা সুবিধায় করে দিয়েছিল রানিমাকে, যেতে হয়নি স্কুলে, শ্বশুরবাড়ির লোক সেভাবে টেরও পায়নি যে মেয়েটি এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ।
গতকাল মাধ্যমিকের প্রথম পরীক্ষা স্কুল ইউনিফর্ম পড়ে যখন সে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যাওয়ার জন্য বাড়িতে জানায়। স্বামী, শ্বশুর বাড়ির আপত্তির সাথে সাথে শুরু হয় পাড়ার লোকের দাদাগিরি । ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। একরত্তি মেয়ে, কি করবে বুঝে উঠতে পারছিল না । বুদ্ধি করে লুকিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেজ করে মুরুটিয়া থানার ওসি এবং জেলা পরিষদ সদস্য টিনা ভৌমিক সাহাকে । অভিযোগ পেয়ে দুইজনই যৌথ তৎপরতা শুরু করে । স্কুল পরিদর্শক ,সেন্টার ইনচার্জ ,প্রধান শিক্ষক প্রত্যেককে বিষয়টি জানানো হয় ।
শেষমেষ মুরুটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী মেয়েটিকে উদ্ধার করে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে, পৌঁছে দেওয়া হয় তার পরীক্ষার সেন্টার “গুয়াবাড়ী নেতাজি বিদ্যাপীঠে ” ।
ফলাফল কি হবে সে জানান দেবে মার্কশিট, কিন্তু যে লড়াই সে বিয়ের সময় জিততে পারেনি মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার জেদ আর তীব্র ইচ্ছা এক অন্য বিপ্লবের জন্ম দিল এলাকায় ।