মলয় দে নদীয়া:- চিনা ফল বলে পরিচিত হলেও, বাংলার বিভিন্ন নদী অববাহিকায় পলি এবং বালি মাটিতে কন্দজাতীয় এই ফল সাদা ফসল হিসেবে ভূমিহীন কৃষকের মুখে হাসি ফোটায় প্রতিবছর। যদিও ইদানীং মাঠের অন্যান্য ফসল এবং নামাজের জমিতেও ব্যাপক ভাবে চাষ হচ্ছে।
তবে নবদ্বীপ বহিরচড়া, বেলেমাঠ, বেনালীরচর, মাঝেরচর সহ ভাগীরথী তীরবর্তী ফিরোজ আলী রফিক মন্ডলের মতো বহু কৃষকের মাথায় হাত। বাজার যেমনই হোক, ফুটিফাটা হয়ে যাচ্ছে একটু বড় সাইজের শাখালু হলেই। অকাল বৃষ্টি কারণেই হয়তো এমন অবস্থা জানাচ্ছেন কৃষকরা। যদিও পঞ্চায়েত পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি বিশেষজ্ঞ কর্মধক্ষ্য কারোরই এ বিষয়ে হেলদোল নেই, অতীতে বিভিন্ন বিষয়ে গিয়ে সুরাহা মিলেনি কৃষকদের তাই আশা-প্রত্যাশা ছেড়েছেন অনেকেই, বাধ্য হয়েই 80 -90 হাজার টাকা প্রতি বিঘের বদলে মাত্র 40- 50 হাজার টাকা দিয়ে বিক্রি করে দিতে হচ্ছে ,এমনটাই জানালেন আমাদের।
অতিরিক্ত পরিমাণে স্টার্চ এবং আমিষ সমৃদ্ধ এই ফল বিক্রেতা সয়িফুদ্দিন মন্ডল বলেন, দশ বারোজন কর্মচারী খাটিয়ে 50 বিঘা জমির ফসল কিনেছেন তিনি, কৃষককে উপযুক্ত দাম দিতে পারছেন না। 50 থেকে 70 কেজির বস্তা প্রতিদিন কলকাতার ধুলাগর আসাম আমতলা পাঁশকুড়া আসামসোল বাংলার এবং বাংলার বাইরে বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছায়। গত বছরেও 35 টাকা কেজি দরে অর্থাৎ বিঘে প্রতি 80- 90 হাজার টাকা দেওয়া সম্ভব হয়েছিলো, এবছর যা পঞ্চাশ হাজার টাকা মাত্র।
অপর এক কৃষক জয়দেব দত্ত জানান, বিক্রির জায়গা জানা থাকলেও কৃষি কাজে ব্যস্ততার মাঝে সময় পাওয়া যায় না তাই মাঠেই বিক্রেতাদের হাতে তুলে দিতে হয় ফসল। গত বছরেও বিঘাপ্রতি 80 -100 মন ফসল ফলে ছিলো এবছর অকাল বৃষ্টির কারণে অনেক গাছ মরে গেছে, ফলন কমে দাঁড়িয়েছে 70 -80 মণ। বর্ধমান হয়ে নৌকা পথে রাজ্যের বাইরের বহু ফল ব্যবসায়ী আসতো এই বেলে মাঠে, এবারে তাদের দেখা নেই স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী ছাড়া। বেশিরভাগ শাঁখালু ফেটে যাওয়ার কারণে, মনমরা কৃষকরা। পহেলা বৈশাখ পর্যন্ত না রেখে অল্প দামে বিক্রি করে বাকিটা গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছেন তারা। এরপরে তিল এবং ভুট্টা চাষের মাধ্যমে এই ক্ষতিপূরণ করার চেষ্টা করবেন বলেই জানিয়েছেন।