দুয়ারে শিক্ষক ! বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি বাড়াতে উদ্যোগী  শিক্ষক-শিক্ষিকারা

News

অঞ্জন শুকুল,নদীয়া : নদীয়ার চাপড়া ব্লকের ভীমপুর থানার সীমান্ত লাগোয়া বিদ্যালয় শিমুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়।এই বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্র-ছাত্রীরা সীমান্তের গেট পেরিয়ে আসে । সেখানেও স্কুলের শিক্ষকদের যেতে দেখা গেল । পড়ুয়াদের স্কুলে ফেরাতে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

লকডাউনে কাজকর্ম তেমন ছিল না। আর তার মধ্যেই পড়ুয়ারা বাইরে কাজে গিয়েছে। মেয়েদের কারো কারো বিয়ে হয়ে গেছে।এ অবস্থায় এক অসহায় মা জানান
মেয়ে অসীমা রায়কে লকডাউনে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। আর্থিক কারণে পারছিলেন না। চারটে ছেলে মেয়ে সংসারের খরচ চালাতে পারছিলেন না।

শিমুলিয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জ্যোতির্ময় ঘোষ বলেন, যেদিন স্কুল শুরু হয় সেদিন ৩০ শতাংশ পড়ুয়া এসেছিল। এখন ৫০ শতাংশে বেশি আসছে না। অভিভাবকদের নিয়ে মিটিংও সফল হয়নি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যে গ্রামে আমাদের স্টুডেন্ট আছে, সেই গ্রামে যাব। শিক্ষক শিক্ষিকারা থাকবেন। পড়ুয়াদের বাড়ি খুঁজে বের করবো। যারা আসছে তাদের বাড়ি গিয়ে শুনবো কিছু সমস্যা আছে কি না ! সেই ব্যাপারে সচেতন করবো। যারা আসছে না তারা কেন আসছে না জানব। তাদের আনার জন্য অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে যা পরিকল্পনা নেওয়ার দরকার তা করবো। কি সুবিধা অসুবিধা আছে শুনে দূর করার চেষ্টা করবো। বেশ কিছু ছাত্র বাইরে কাজে চলে গিয়েছে। কারও মতে আর্থিক কারণে পাঠাতে হয়েছে কেউ বলছেন নিজে ইচ্ছা মতো চলে গিয়েছে। পড়াশুনা করতে চায়না। পড়াশুনা হচ্ছে না। পড়াশুনা চালু হয়েছে। তারা এখন কাজ থেকে আসতে চাইছে না। অভিভাবকদের বোঝানো চলছে শিশু শ্রম বৈধ নয়। কিছু মেয়ে যাদের বয়স হয়নি। তাদের বিয়ে হয়ে গেছে।

স্কুলের এক শিক্ষিকা আক্ষেপের সুরে জানান বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র তুহিন মন্ডল সে স্কুলে পড়তে চায় কিন্তু তার বাবা সাইকেলের দোকানে কাজে লাগিয়ে দিয়েছে । আমাদের দেখে ছাএটি কাতর আর্তনাদের সঙ্গে জানায় “আমি পড়তে চাই । আমার বাবা আর পড়াতে চায় না”।

ছাএটির কাতর আর্তনাদে সহযোগীতার আশ্বাস দেন  শিক্ষিকা। হয়ত আবার আগের মত বিদ্যালয়ে ফিরবে তুহিন। স্কুলের এই অভিনব উদ্যোগকে অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছেন ।

Leave a Reply