কালিয়াচকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছায়া ! ভোটাভুটিতে ২৫-১২ ভোটে জয়লাভ করে সভাপতি নির্বাচিত হলেন নিরুপমা ঘোষ

News

দেবু সিংহ,মালদা: গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে পঞ্চায়েত সমিতিতে ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে ভোটাভুটিতে দলের ব্লক সভাপতির কাছে কার্যত হেরেই গেলেন তৃণমূল বিধায়ক। মালদার কালিয়াচক-৩ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতিতে ভোটাভুটির মাধ‍্যমে সভাপতি নির্বাচন হয়। তাতে প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তৃণমূলেরই দুই সদস‍্যা নিরুপমা ঘোষ এবং মালেনুর বিবি। ৪২ আসন বিশিষ্ট ওই পঞ্চায়েত সমিতিতে ২৫-১২ ভোটে জয়লাভ করে সভাপতি নির্বাচিত হন নিরুপমা ঘোষ। বিজেপির তিন সদস্য অবশ্য ভোটদানে বিরত থাকেন এবং বোর্ড গঠনের সভায় গরহাজির ছিলেন দুই সদস্য।

স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের কাছ থেকে সূত্রের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, ওই বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক তথা মালদার তৃণমূল যুব সভানেত্রী চন্দনা সরকারের সঙ্গে ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা মালদা জেলা পরিষদের সদস্য দূর্গেশ সরকারের লড়াই দীর্ঘদিন ধরেই অব‍্যাহত রয়েছে। আর তার জেরেই পঞ্চায়েত সমিতিতে দুর্গেশবাবুর মদতে দলীয় সভাপতিকে অনাস্থা ডেকে অপসারণ করেন তৃণমূলের ১৯ জন সদস্য বলে অভিযোগ। যদিও দুর্গেশবাবুর অনুগামীদের পাল্টা অভিযোগ, “দলের বিধায়কই বিজেপির সঙ্গে আঁতাত করে চলছেন। বিজেপিকে ঠেকাতেই সমিতিতে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।”

বৈষ্ণবনগগের বিধায়ক চন্দনাদেবী মালদা জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি পদেও রয়েছেন। সেই সঙ্গে জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি পদেও রয়েছেন তিনি। দুর্গেশবাবুও জেলা পরিষদের সদস‍্য। দুর্গেশবাবু তৃণমূলের বৈষ্ণবনগর তথা কালিয়াচক-৩ নম্বর ব্লকের সভাপতি। পরে পঞ্চায়েত সমিতির দখল নিয়ে এলাকার দুই প্রভাবশালী নেতৃত্ব চন্দনা ও দুর্গেশের লড়াই তুঙ্গে উঠেছিল। তলবিসভায় তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পদ থেকে শাহনাজ বেগমকে যেদিন অপসারণ করা হয়, ওইদিনই দুর্গেশবাবুর অনুগামী সাইলাপুরের এক তৃণমূল নেতা তরুণ ঘোষকে ‘মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো’ হয় বলে অভিযোগ। সেই তরুণ ঘোষের সহধর্মিনী নিরুপমা ঘোষ এদিন সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। আর এদিনই আদালতের মাধ্যমে জামিন পেয়ে জেল থেকে ছাড়া পান তরুণ ঘোষ। ওই নেতার গ্রেফতারির বিষয়টি নিয়েও দলের নিচুতলার কর্মীদের মধ‍্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

কালিয়াচক-৩ নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির মোট আসন সংখ্যা ৪২। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল একাই দখল করে ২৭টি আসন। বিজেপি পায় ১০টি আসন। কংগ্রেস তিনটি, একটি সিপিএম ও একটিতে নির্দল প্রার্থী জয় পেয়েছিলেন। সর্বসম্মতিক্রমে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন তৎকালীন জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনের ভাইয়ের স্ত্রী শাহনাজ বেগম। সভাপতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম অভিযোগ তুলে সরব হন তৃণমূলের সদস্যরাই। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে শাহনাজ অপসারিত হন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির দলনেতা ভরতচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “এলাকার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতেই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি করা হল নিরুপমা ঘোষকে। এখানে ভোটাভুটিতে বিধায়ক চন্দনার অনুগামীরা পরাজিত হয়েছেন।”

Leave a Reply