মলয় দে নদীয়া : ভাদ্র মাসের শুক্ল পক্ষের অষ্টমী তিথিতে রাধার জন্ম হয়েছিল বলে মনে করা হয় ,সেই কারণেই এই দিনটিতে রাধা অষ্টমী পালন করা হয় । কথিত আছে , এই সময় সূর্যদেব পৃথিবী ভ্রমণ করতে আসেন । তার পৃথিবীর অপরূপ রূপে মুগ্ধ হয়ে তিনি মন্দর পর্বতের গুহায় গভীর তপস্যায় মগ্ন হন । সূর্যদেব দিনের পর দিন এইভাবে তপস্যায় মগ্ন থাকার ফলে পৃথিবী অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। স্বর্গের দেবতারা তখন সৃষ্টি রক্ষার জন্য শ্রী হরির স্মরণাপন্ন হন । ভগবান বিষ্ণু সূর্যের সামনে এসে তার ধ্যান ভঙ্গ করেন ও তাকে বর দিতে চান । শ্রী হরি সূর্যকে বলেন যে পৃথিবীর ভার লাঘবের জন্য তিনি দেবকী ও বসুদেবের পুত্র রূপে জন্মগ্রহণ করবেন ও বৃন্দাবনের নন্দালয়ে পালিত হবেন । সূর্যদেব সেখানে বৃষভা নু রাজা হিসাবে জন্ম নেবেন । এই বৃষ ভানুর মেয়ে হিসাবেই জন্ম হয় ।
সনাতন পঞ্জিকা মতে ১৩ই সেপ্টেম্বর সোমবার ৩ টে ১২ মিনিটে রাধা অষ্টমীর সূচনা এবং সমাপ্তি হবে ১৪ই সেপটেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ১ টা বেজে ১০ মিনিটে ।
পৌরাণিক তথ্য অনুযায়ী রাজা শ্রী বৃষ ভানু এবং তার স্ত্রী শ্রী কীর্তি রাধাকে তাদের কন্যা হিসাবে প্রতিপালন করেছিলেন । রাধা কল্প , ব্রহ্ম কল্প , ভারহাকল্প এবং পদ্ম কল্প নামক এই তিনটি কল্পকে রাধাকৃষ্ণের সর্বোচ্চ শক্তি হিসাবে বর্ণনা করা হয়েচে । এই কারণেই বেদ ও পুরান প্রভৃতিতে তাকে কৃষ্ণ বল্লোভা , কৃষ্ণাত্মা , কৃষ্ণপ্রিয়া বলে অভিহিত করা হয়েছে ।
পৌরাণিক কাহিনি গুলিতে এমন একটি বিবরণ পাওয়া যায় যে কৃষ্ণ অবতার নেবার আগে ভগবান শ্রী বিষ্ণু তার ভক্তদেরও পৃথিবীতে আসার নির্দেশ দিয়েছিলেন । সেই সময় বিষ্ণু প্রিয়া লক্ষ্মী রাধা রূপে পৃথিবীতে এসেছিলেন । শাস্ত্র মতে এই রাধা অষ্টমীর ব্রত যিনি পালন করেন তাদের কোনোদিনও অর্থের অভাব হয় না । তাদের ওপরে শ্রীকৃষ্ণ ও রাধার আশীর্বাদ বজায় থাকে । এই কারণেই ভক্তরা কৃষ্ণ পূজা করার আগে রাধার পুজো করেন এবং বিশ্বাস করা হয় রাধা অষ্টমীর উপবাস করলে সমস্ত পাপের বিনাশ ঘটে । এই বিশেষ দিনে রাধার মূর্তি আবার কোথাও রাধা কৃষ্ণের যুগল মূর্তি পঞ্চমৃত দ্বারা স্নান করিয়ে নতুন বস্ত্র পরিধান করিয়ে নানা বিধ ফলমূলের নৈবেদ্য ও ভোগ সহ পুজো করার রীতি রয়েছে ।