মলয় দে নদীয়া:- ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট ভারতবর্ষজুড়ে স্বাধীনতা দিবস পালিত হলেও, নদিয়া মুর্শিদাবাদ এর একটি বড় অংশ কিন্তু ১৮ই আগস্ট পুনরায় ভারতের জাতীয় পতাকা তুলে অভ্যস্ত।
বহু আন্দোলনের মধ্য দিয়ে১৯৪৭ সালের ৩রা জুনের তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার বলকাইজেশন প্ল্যান এর মাধ্যমে বাধ্য হয়ে সিদ্ধান্ত নেন ভারত এবং পাকিস্তানের দেশভাগের মাধ্যমে স্বাধীনতা হস্তান্তর করবেন। সেই কারণে ২৬শে জুন সিরিল র্যাডক্লিফ দুজন হিন্দু এবং দুজন মুসলমান সম্প্রদায়ভুক্ত সদস্যদের নিয়ে গঠিত এক কমিশনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে নদীয়া মুর্শিদাবাদ ও যশোর জেলা পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্তিতে কমিশনে মতান্তর দেখা যায়, বিশেষত নদীয়া হিন্দু ধর্মের প্রাচীন ঐতিহ্য বহন করে। এইরকম সমস্যার সমাধান না করেই ঘোষণা হয়ে যায় ১৪ এবং ১৫ তারিখে স্বাধীনতা দিবস।
যথারীতি নদীয়াতে মুসলিম লীগের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের পতাকা তোলা হয় শান্তিপুর ডাকঘরে, কৃষ্ণনগর রানাঘাট সহ অন্যান্য প্রান্তেও। শান্তিপুরের সুসন্তান আইনজ্ঞ পন্ডিত লক্ষীকান্ত মৈত্র কৃষ্ণনগরের রাজপরিবারের জ্যোতির্ময়ী দেবীর সহযোগিতায় দিল্লিতে জহরলাল নেহেরু কে সকল প্রমাণাদি দিয়ে সমস্যার কথা বোঝাতে সক্ষম হন। অবশেষে ১৭ই আগস্ট রাতে অল ইন্ডিয়া রেডিও সেন্টারে ঘোষিত হয় নদিয়া মুর্শিদাবাদ থাকছে ভারতের মধ্যে। আবারও দ্বিতীয়বারের জন্য ১৮ই আগস্ট ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হয়। সেই থেকে নদিয়ায় আজ ১৮আগস্ট ভারতভুক্তি দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে।
জেলার কৃষ্ণনগর রানাঘাট চাকদহ সহ বিভিন্ন এলাকায় স্বাধীনতা দিবস পালনের উৎসবের চেহারা চোখে পড়ল আমাদের। শান্তিপুরে গবার চর গঙ্গার ঘাটে মৎস্যজীবীদের মধ্যে নৌকায় জাতীয় পতাকা লাগিয়ে নৌকা বাইচ রীতি দীর্ঘদিনের। শান্তিপুর ডাকঘর মরে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর গলায় মাল্যদান এবং নাচ গান আবৃত্তির মাধ্যমে পালিত হলো আজকের এই বিশেষ দিনটি।