ভয়ংকর দ্বিতীয় ঢেউ ! দীর্ঘ ২০ ঘন্টা অতিক্রান্ত হওয়ার পরে স্বাস্থ্যকর্মীর স্ত্রীর মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা জেলা প্রশাসনের

Social

মলয় দে নদীয়া:- গত ২৪ শে এপ্রিল নদীয়া জেলার শান্তিপুর শহরের বেজপাড়ার বাসিন্দা শান্তিপুর হাসপাতালে কর্মরত এক স্বাস্থ্য কর্মীর স্ত্রীর সর্দি কাশি জ্বরের কারণে লালা রসের নমুনা পরীক্ষা করতে দেওয়া হয় শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। স্বাস্থ্যকর্মীর স্ত্রীর শারীরিক অবনতি ঘটে ক্রমশই!

স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা যায় গত ১৬ তারিখে তাদের বাড়ির মোট ১১ জন সদস্যের মধ্যে ৬ জন করোনা আক্রান্ত! অথচ ওই স্বাস্থ্যকর্মী , জানান তাদের মোবাইলে কোন মেসেজ আসে নি! জানা যায় তার পরিবারের অপর দুই ভাই এবং তাদের স্ত্রী মিলিয়ে মোট চারজন ভোটকেন্দ্রে সাধারণভাবেই ভোট দেন। কোভিড আক্রান্তদের জন্য অবশ্য নির্বাচন কমিশনের পিপিই কিট পরিধান করে ভোটের শেষে আলাদা ব্যবস্থা ছিলো! কিন্তু সে কথা পরিবার সূত্রে না জানালে ভোট কর্মীরা কিভাবে জানবেন! শুধু তাই নয়! তিনি ভোট কর্মী হিসেবে কল্যাণীতে ভোট কার্য পরিচালনা করে গতকাল রাত একটা নাগাদ বাড়ি ফেরেন, রাত তিনটে নাগাদ তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়। এরপরে সকালে তিনি নিজে শান্তিপুর পৌরসভা উপস্থিত হন সৎকারের গাড়ি “বৈতরণী” পাওয়ার জন্য। কিছুক্ষণ বাদে গাড়ি এসে পৌঁছানোর পর, গাড়ির চালক জানতে পারেন ওই মৃতদেহ করোনা আক্রান্ত।

শান্তিপুর হাসপাতালে কর্মরত হবার সুবাদে, সুপারেন্টেন্ড কে জানান বিষয়টি, তিনি চেষ্টা করছেন বলার পরও কেটে যায় রাত নটা পর্যন্ত! অত্যাধিক গরম পড়ার কারণে মৃতদেহ থেকে পচা গন্ধ নির্গত হতে থাকে। বিকাল তিনটে নাগাদ অবশ্য, ডিএম এবং বিডিও’র সাথে যোগাযোগ করা হয়,  সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী রাত ১০.৪৫ নাগাদ মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় প্রশাসনের তরফ থেকে।

বিশেষ সূত্রে জানা যায় সরকারি প্রটোকল অনুযায়ী, করোনা আক্রান্ত মৃত দেহ বহনকারী গাড়ি নদীয়া জেলায় একটি আছে, এবং সেই কারণেই এত দেরি। একজন স্বাস্থ্যকর্মী হওয়া সত্ত্বেও তার পরিবারের দুই একজনকে বাড়ির সামনে ইতস্তত ঘোরাঘুরি করা এবং প্রতিবেশীদের প্রশ্ন এড়িয়ে করোনা রিপোর্ট আত্মগোপন করা। ভোট দিতে এবং ভোট কর্মীর কাজ করতে যাওয়া কতটুকু সচেতনতার দৃষ্টান্ত! সরকারি বিধি ব্যবস্থার বা কি হাল ! যে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ভোট ভিক্ষা করতে যোগাযোগ করেছিলেন একাধিকবার তারাই বা কোথায়! এইসব প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে অতি সাধারন মানুষের স্বাস্থ্যের ভবিষ্যৎ!

এলাকার সুপরিচিত, প্রভাবশালী সরকারি স্বাস্থ্য কর্মীর যদি এই পরিস্থিতি হয়! তাহলে দিন আনা দিন খাওয়া জনগণের উপর দিয়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ কিভাবে আছড়ে পড়বে, এবং তাতে আরো কত প্রাণ বলিদান হবে সেটাই দুশ্চিন্তার।

তাই শুধু সচেতনতার বানী ছড়ানো নয়, অন্তত নিজের জন্য নিজের পরিবারের জন্য মাস্ক, স্যানিটাইজার বাধ্যতামূলক হোক নিজের মনের কাছে।

সবার কাছে আবেদন ভিড় এড়িয়ে চলুন, মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। নিজেকে সুরক্ষিত রাখুন ও পরিবারের সদস্যদের করোনাবিধি মেনে চলতে অনুরোধ করুন।

Leave a Reply