সোশ্যাল বার্তা: প্রতি বছর দীঘার পার্শ্ববর্তী রাজ্য ঊড়িষ্যার বিখ্যাত চন্দনেশ্বর মন্দিরের গাজন উৎসবে ঊড়িষ্যা এবং পশ্চিম বঙ্গের লক্ষাধিক মানুষ সামিল হতেন বাবা চন্দনেশ্বরের ভক্ত হয়ে মানত রক্ষা করতে , কেউ কেউ আবার পৈতে ধারণ করতে কিন্তু এবছর বাধ সাধল করোনা। যাঁর ফলে গত বছর এই মন্দিরের গাজন উৎসব বন্ধ রাখা হয়েছিল। কয়েক মাস আগে ভক্তদের জন্য মন্দির খুলে দেওয়া হলেও কিন্তু করোনার ভয়াবহতার জন্য আবার মন্দির সহ চড়ক উৎসব বন্ধ রাখার জন্য বালেশ্বর জেলা প্রশাসন বিশেষ বৈঠকে মিলিত হয় এবং সিদ্ধান্ত নেয় ৫ই এপ্রিল থেকে ১৪ ই এপ্রিল পর্যন্ত মন্দিরে কোনো প্রকার পূজা ,মানত রক্ষা,পৈতে দেওয়া,জলঢালা ,নীল ব্রত পালন কিংবা দর্শনের জন্য ভক্তদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ।
আর তাঁর জেরেই পূর্ব মেদিনীপুর থেকে অগণিত বহু ভক্ত স্থানীয় শিবালয় মন্দিরে পৈতে ধারণ করে মানত রক্ষা করতে শুরু করে দেয়।
পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের বহু প্রাচীন প্রায় পাঁচশো বছরের পুরানো মন্দির, সেই সময়কালে রাজা দুর্গাদাস রায় এই শিবালয় মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেন। যা আজও নিত্য পূজার মধ্য দিয়ে মন্দিরের আরাধনা হয়। শিবালয়ের শিব মূর্তি এক বিশেষ ভাবে তৈরি। গাজন উৎসব পালনে স্থানীয় ভক্তদের মধ্যে অনেকেই মানসিক পুরনের জন্য দুধ, ডাব, ঢালেন, এমনকি গাজনের নীল রাত্রির দিন কয়েকশত ভক্তরা বাঁকে করে জল নিয়ে এসে শিবলিঙ্গের ওপর ঢালেন, তবে এবছর উড়িষ্যা রাজ্যের চন্দনেশ্বর মন্দির বন্ধ থাকার কারনে ভগবানপুর শিবালয় মন্দিরে ভক্তের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। বিশেষ বৈশিষ্ট্য হিসেবে তেরোদিন ধরে তেরো ভক্তা পালন হয় ভগবানপুর শিবালয় মন্দিরে। কিশোরপুরের বাসিন্দা মন্টু জানা জানান তিনি প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর ধরে চন্দনেশ্বরে ভক্তা হয়ে আসছেন, কিন্তু এবছর করোনা প্রকোপের কারনে উড়িষ্যা রাজ্য লকডাউন করে ফলে ভগবানপুরের শিবালয় মন্দিরেই ভক্তা হয়েছেন তিনি।
মন্দির কর্তৃপক্ষ সুদেশ রঞ্জন মেট্যা বলেন চন্দনেশ্বরের মন্দির লকডাউনের ফলে বন্ধ, তাই এই মন্দিরে প্রচুর ভিড় হবে, গতবছর লকডাউনের ফলে বন্ধ ছিল কিন্তু এ বছর আমরা করোনা বিধি মেনে মাক্স, স্যানিটাইজার দিয়ে সামাজিক দূরত্ব বিধিকে মান্যতা দিয়েই নীলরাত্রি পালন করব।
এক ভক্ত সুমিত্রা মোহান্তি বলেন তিনি প্রতিবছর চন্দনেশ্বর মন্দিরে যান, কিন্ত তিনি ওখানকার স্থানীয় পুরোহিতের কাছে ফোনে জানতে পারেন এ বছর চন্দনেশ্বরে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে করোনার কারনে ,তাই তিনি ভগবানপুরের শিবালয় মন্দিরে দুধ ঢেলে মানত পুরন করলেন।