মলয় দে, নদীয়া :আজ ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির নবদ্বীপ শাখার পক্ষ থেকে নবদ্বীপ শহরে ভগৎ সিং-এর শহিদ দিবস পালন করা হয়। আজ ২৩ শে মার্চ সারা নবদ্বীপ শহর জুড়ে ভগৎ সিং-এর উক্তি সম্বলিত পোষ্টারিং কর্মসূচী চালানো হয়।
ভগৎ সিং সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সমাজের শোষিত মানুষদের শোষনের থেকে মুক্তির জন্য লড়াই করেছিলেন। সেই কারনে ১৯৩১ সালের আজকের দিনে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ফাঁসি দেয়। দেশের এই সংকটজনক পরিস্থিতিতে ভগৎ সিংকে ফিরে দেখা, তাঁর উদার গণতান্ত্রিক, সমন্বিত জাতীয়তাবাদের শিক্ষার চর্চা নিয়ে ছিল জরুরী আলোচনা। জনসচেতনতার লক্ষ্যে লিফলেটও বিলি করা হয়৷
ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির নবদ্বীপ শাখার সম্পাদক প্রতাপ চন্দ্র দাস বলেন, ” ভারতীয় সংবিধানের 51(A)h অংশে বৈজ্ঞানিক মেজাজ, মানবতা, অনুসন্ধানের ঝোঁক এবং 19(1)a অংশে চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলা আছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে উগ্র হিন্দুত্ববাদের আদর্শে চলা বর্তমান শাসকের ভয়ে জনগণ কথা বলতেও ভয় পাচ্ছে। এম এম কালবুর্গি, নরেন্দ্র দাভোলকর, গোবিন্দ পানসারে এবং গৌরী লঙ্কেশের মতো মুক্তকন্ঠের মানুষদের হত্যা করা হয়েছে সামাজের সামনে সত্যটা তুলে ধরার জন্য। সংবিধানের পথে শহীদ ভগৎ সিং-এর যুক্তিবাদী ভাবনায় বিজ্ঞানমনষ্ক ভারত গড়ে তুলতে সকল বিজ্ঞানমনষ্ক ও যুক্তিবাদীদের এগিয়ে আসা উচিৎ। ”
সমিতির আলোচনায় বারবার উঠে আসে বর্তমানে ভগৎ সিং-এর প্রাসঙ্গিকতার বিষয়টি। ভগৎ সিংয়ের লড়াকু মানসিকতা, চিন্তা, চেতনা, যুক্তিবোধ, আদর্শ ও উদ্দেশ্য ভীষণভাবে প্রাসঙ্গিক। তা এখনও দেশের যুবসমাজকে প্রেরণা দেয়, উৎসাহ দেয়। দেশের জন্য, নিপীড়িত শোষিত মানুষের জন্য তাঁর জীবনদান হল দেশ ও জাতির জন্য প্রকৃত আত্মবলিদানের এক জ্বলন্ত উদাহরণ। লক্ষ্য করার বিষয়, অন্য স্বাধীনতা সংগ্রামীরা যখন আঁকড়ে ধরেছেন হিন্দুধর্মকে, ভগৎ সিং তখন নির্ভয়ে ডাক দিয়েছেন ধর্ম ও ঈশ্বরবিশ্বাস ছেড়ে বেরিয়ে আসবার । ফাঁসির আদেশের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যখন অন্যেরা আঁকড়ে ধরে ঈশ্বরকে, তখন ভগৎ সিং অকম্পিতচিত্তে লিখেছিলেন ‘কেন আমি নাস্তিক’ নামক সুবিখ্যাত পুস্তিকা, দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নস্যাৎ করেছিলেন ভ্রান্ত বিশ্বাস ও কুসংস্কার ।
তিনি আজ না থাকলেও তাঁর যুক্তিবাদী চিন্তা, তাঁর লড়াই সংগ্রাম আজও প্রাসঙ্গিক।