মলয় দে, নদীয়া :- একটা সময় ছিলো যখন ছাত্র রাজনীতির নেতৃত্ব প্রদান করতে গেলেও লাগতো শিক্ষাগত যোগ্যতার মূল্যায়ন! এখন অবশ্য সে সব অতীত! ছাত্র রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন না এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা! তাই হয়তো বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে উঠেছে, কিশোর মনের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে। কিন্তু একটা সময় , দেশের রাজ্যের দল বা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলানোর বিখ্যাত মানুষটিও কিন্তু উঠে এসেছিলেন সেই ছাত্র রাজনীতি থেকেই! পলিটিক্যাল সাইন্স বিষয়টা তো আর মিথ্যে হতে পারে না! হয়তো সঠিক পার্টি ক্লাস, বা দেশের হাল হকিকত সম্পর্কে কিশোর মনের খোরাক জোগাতে পারছেন না, ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব। অথবা কথায় এবং কাজে বিস্তর পার্থক্য দেখেই হীনমন্য হচ্ছেন তারা, এমনটাই জানা গেল বেশ কিছু বছর আগে এসএফআই করে আসা প্রবীণ মানুষদের কাছ থেকে।
তবে কিছু ছাত্র ছাত্রী তো এখনো আছে, যারা পড়াশোনা করার সাথে সাথেই ছাত্র আন্দোলনে সামিল হয়। অন্য ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কিছু করার তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে এগিয়ে চলে!
রাজনৈতিক সভা সমিতি, এ দল থেকে সে দলে যোগদান,পূজা পার্বণ, সিনেমা হল রেস্তোরাঁ পার্ক সবটাই খুলেছে! ব্রাত্য শুধু বিদ্যালয়। আর অনলাইনে ক্লাসের দোহাই দিয়ে, অন্তত প্রত্যন্ত গ্রামের এন্ড্রয়েড মোবাইল না থাকা বেশিরভাগ দরিদ্র পরিবারের ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে! হাতে মাত্র আর কিছুদিন সামনেই মাধ্যমিক! নদীয়া জেলার হরিপুর অঞ্চল এসএফআইয়ের ইউনিট সম্পাদক দীপঙ্কর হালদার সভাপতি কোয়েল মন্ডল দুজনেই এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। তারা সংগঠনগতভাবে শান্তিপুর ইউনিট কমিটির সম্পাদক প্রামানিক কে জানায় অন্তত সপ্তাহে একটি দিন ফ্রি কোচিং সেন্টারের ব্যবস্থা করে দেয়া যায় কিনা! এ ব্যাপারে নদীয়া জেলার সম্পাদিকা মৌপ্রিয়া প্রিয়া রাহা শিক্ষক সংগঠন এবিটি এর দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের সাথে কথা বলে গত মাসের শেষ দিন রবিবার হরিপুর হাই স্কুলের পাশে ওই অঞ্চলের কুড়ি জন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে একটি ফ্রি কোচিং ক্লাসের ব্যবস্থা করেন। এর পরবর্তীতে গতকাল রবিবার দ্বিতীয়বারের জন্য দীর্ঘ তিন ঘন্টার পড়াশোনা বিষয়ক আলোচনা।
স্থানীয় মিউনিসিপাল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিপ্লব মন্ডল এবং পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য অজয় সাহা এ ব্যাপারে তাদের সহযোগিতা করেছে। ছাত্র-ছাত্রীরা জানান দীর্ঘদিন তারা পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিল বিষয় বুঝতে পারছিলেন না, সেগুলো সমাধান হওয়াই যথেষ্ট খুশি। শান্তিপুর এসএফআই ইউনিটের সম্পাদক অয়ন প্রামানিক , সভাপতি বাবলু শেখ জানান আপাতত বিষয়টি হরিপুরের সীমাবদ্ধ থাকলেও আগামীতে, বিভিন্ন অঞ্চলে এবং শহরে করার চিন্তাভাবনা আছে। শান্তিপুর সিপিআইএম জোনাল সম্পাদক সৌমেন মাহাতো এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন,অতীতেও কৃত্তিবাস জনকল্যাণ কেন্দ্রে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের নিয়ে এ ধরনের আয়োজন হয়েছিলো, একাধিকবার। আবারো তা সচল রাখার প্রয়াস কে ধন্যবাদ জানাই।