দেবু সিংহ, মালদা: তিন বছর আগে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল বিদ্যুতের লাইন। তারপর থেকে অন্ধকারে রয়েছে গোটা এলাকা। এলাকায় বসানো হয়েছে জলের পাইপলাইন। কিন্তু তিন বছরেও জল বরাহের ব্যবস্থা হয়নি। সরকারি কোনও নলকূপও নেই। বাসিন্দাদের ভরসা নিজেদের বসানো অগভীর নলকূপ। সেই জল খেয়ে পেটের রোগে ভুগছেন বাসিন্দারা। বিদ্যুত না থাকায় কুপি, লন্ঠনের আলোয় পড়াশুনা করতে হচ্ছে পড়ুয়াদের।
বিদ্যুত ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করার দাবিতে পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের সর্বস্তরে আবেদন নিবেদন জানিয়েও ফল হয়নি বলে অভিযোগ। তাই এলাকায় বিদ্যুত ও পানীয় জলের দাবিতে রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বাসিন্দাদের বিক্ষোভে সামিল হলো মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের ধুমসাডাঙি এলাকা।
এদিন সকাল থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে ভালুকা হয়ে মালদহগামী রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু হয়। রাস্তায় টায়ার পুড়িয়ে ওই বিক্ষোভ-আন্দোলনের জেরে চূড়ান্ত নাকাল হতে হয় নিত্যযাত্রীদের।
পুলিশ ও গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এলাকায় গেলেও প্রতিশ্রুতি না মেলা পর্য়ন্ত অবরোধ তোলা হবে না বলে আন্দোলনকারীদের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে! ধুমসাডাঙি এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দাই গরিব! নির্বাচনের মুখে এলাকার এমন বেহাল অবস্থা নিয়ে বাসিন্দারা আন্দোলনে নামায় অস্বস্তিতে শাসক শিবির। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। পঞ্চায়েত,পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ সর্বত্রই শাসকদল ক্ষমতায় থাকলেও কেন অনুন্নয়নের প্রশ্নে তাদের পথে নামতে হল সেই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় ২৯টি বাড়িতে বিদ্যুত সংযোগ ছিল! ২০১৭ সালের বন্যায় বিদ্যুতের খুঁটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তা আর সংস্কার না হওয়ায় অন্ধকারেই রয়েছেন বাসিন্দারা। আর পড়ুয়াদের ভরসা কুপি, লন্ঠন! কুপির আলোয় পড়াশুনা করেই গত বছর উচ্চ মাধ্যমিতে ৮৪ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করেছিল বিজয় মিশর। তাকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়েছিল। তখন এলাকায় গিয়ে বিদ্যুত ব্যবস্থা ফের চালু করারর আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। এছাড়া পানীয় জলের ব্যবস্থার আশ্বাস দেওয়া হলেও তা এখনও কার্য়কর হয়নি। তাই এদিন বাধ্য হয়েই রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বলে জানান বিক্ষোভকারীরা।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রতিমা রবিদাস বলেন, এখানে পাইপলাইন আচে, কিন্তু জলের ব্যবস্থা হয়নি। জল আর বিদ্যুতের দাবিতে তিন বছর ধরে হন্যে হয়ে পঞ্চায়েত-প্রশাসনের দরজায় ঘুরে আশ্বাস ছাড়া কিছু মেলেনি।
বিজয় মিশর বলেন, আমরা যে আবেদন নিবেদন করেছি তার নথিপত্র রয়েছে। তিন বছর ধরে শুধু হচ্ছে হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। শেষ বাধ্য হয়েই বাসিন্দারা পথে নেমেছেন।
যদিও হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি মানিক দাস বলেন, বিদ্যুত সংযোগ ও পানীয় জলের বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত যাতে সমস্যা মিটে তা পঞ্চায়েতকে দেখতে বলা হয়েছে।