কৃষি কথা: শীতের মরশুমে চলছে বোরো ধান রোয়ার কাজ, খড়ে আগুন ধরানো আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ! কিন্তু কেন?

Social

মলয় দে, নদীয়া:- জুন-জুলাই মাসে বপন করা আমন ধান উঠেছে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে। যার মধ্যে বিভিন্ন দেশী এবং হাইজিন ভ্যারাইটির মধ্যে শতাব্দি, ৪৭৮৬ , রাধা তিলক, রাঁধুনি পাগল, প্রতীক্ষা, ললাট সুগন্ধি, মল্লিকা নানান রকম প্রজাতি থাকলেও বর্তমানে বোরো ধানের রোপনের উদ্দেশ্য হাজার চুয়াল্লিশ এবং মিনিকেট বাদে খুব বেশি প্রজাতির ধান চাষ করতে দেখা যায় না কৃষকদের। কারণ হিসেবে তারা জানান, এক বিঘে জমিতে প্রায় দেড় হাজার টাকার জল কিনতে হয়, তাই সরু ধানের চাষ করলে তবেই তা খরচে পোষায়।

ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি দিক থেকে আগামী আমন ধান বপনের উদ্দেশ্যে বীজ তৈরির প্রস্তুতি চলে। দেশি ধানের ক্ষেত্রে এক বছর আগের পুরনো ধান অঙ্কুরোদগমে উপযুক্ত হলেও, হাইজিন ভ্যারাইটির ক্ষেত্রে পুরনো ধানের বীজ ব্যবহারের সুফল মেলে না। তাই এ ধরনের ধানের বীজ সংগ্রহ করেন সরকারি বা বেসরকারি অভিজ্ঞ সংস্থা থেকে। এরপর বীজতলায় চারা গাছ তৈরির কাজ করার সাথেই, নাঙ্গল অথবা ট্রাক্টর দিয়ে জমি চষা, জমিতে জল বাধিয়ে রেখে মাটি নরম করা, এবং আরো একবার চাষ এবং মই দিয়ে জমি বপনের উপযোগী করে তোলেন। জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি বীজতলা থেকে সংগ্রহীত তিন চারটি চারা, একত্রিত করে সারিবদ্ধ ভাবে রোপন করা হয়। বপণকারী অধিকাংশই পড়াশোনা কম জানলেও শুধুমাত্র অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে হাওয়ার গতিপ্রকৃতির দিকে নজর দিয়ে বাতাসের অনুকূলে বপন করেন তারা। এমনকি প্রতিটি ধানের গোছ, পারস্পরিক দূরত্বও হার মানায় জ্যামিতিক মাপ কে। বপনের পর অন্নদাতা কৃষকের নিয়মিত পরিচর্যায় গাছের বৃদ্ধি ফুল ফল রক্ষণার কাজে লিপ্ত থাকেন অক্লান্ত পরিশ্রম দিয়ে, আর গোটা সমাজ অপেক্ষায় থাকি দুটো ভাতের জন্য!

তবে কৃষকদের জমিতে ফসল উঠানোর পর আগুন ধরানো আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ! কিন্তু কেন? তা নিয়েই আজকে আমাদের প্রতিবেদন।

কাদা জমিতে মই দেওয়ার সময় খেয়াল করা যায়! বেশকিছু ধরনের পাখি বিশেষত বক অপেক্ষায় থাকে মাটির মধ্যে থাকা ছোট ছোট বিভিন্ন কীটপতঙ্গ খাওয়ার অপেক্ষায়! জমিতে আগুন ধরানোর ফলে একদিকে যেমন তারা খাদ্য সঙ্কটে পড়তে পারে, ঠিক তেমনই জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি পায় ওই ধরনের গতি বিধি এবং জীবনযাত্রার ফলে। আগুন ধরালে তা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়! ফলে জমি হারায় তার উর্বরা শক্তি।

Leave a Reply