পেশা ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা ভেঙেছে! স্বল্প খরচে বিপুল চাহিদা মেটাতে শিল্পকর্মের নৈপুন্যতা ধ্বংসের মুখে 

Social

মলয় দে, নদীয়া :- একসময় শিল্প ছিল জিনগত। বংশপরম্পরায় একই পেশায় নিযুক্ত শ্রমিকরা পরিণত হয়েছিল শিল্পীতে। পেশা ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা আজ খয়িষ্ণু! জনসাধারণের বিপুল চাহিদা, বিজ্ঞানের প্রভূত উন্নতির ফলে সব শিল্পেই লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! একদিকে যেমন কম্পিউটার, ইন্টারনেট ব্যবস্থায় তথ্য এসেছে হাতের মুঠোয়, অপরদিকেও ঠিক তেমনই বংশ পরম্পরায় জিনগত শিল্প নৈপুন্যতা হারাচ্ছে ক্রমশ।

সূত্র ধরে মাপজোপ করার থেকে সূত্রধর কথাটা এসেছে বলেই মনে করা হয়, যা বর্তমানে ছুঁতোর মিস্ত্রি বলে পরিচিত। একসময় ভাস্কর শিল্পী বলে অভিহিত করা হতো তাদের। এমনকি ব্রাহ্মণদের মতন গলায় পৈতে ব্যবহার করার অধিকারী ছিলেন এঁরা। মহাভারতে কর্ণ কে সূতপুত্র বলা হয়ে থাকে, তাঁর পালিত পিতা অধিরথ। মহারাজা ধৃতরাষ্ট্রের সারথি ছিলেন, রথ বানানোর কাজের দায়িত্ব ছিল তার ওপর। সেই বংশোদ্ভূত সূত্রধর সম্প্রদায় বলেই মনে করেন অনেকে।
স্কন্দ পুরাণ অনুযায়ী বিশ্বকর্মার মুখোদ্ভূত মনু, ময়, ত্বষ্টা, শিল্পী, দৈবজ্ঞ অর্থাৎ লৌহকার ,কাষ্ঠকার, তাম্রকার, শিলাকার ও সুবর্ণাকার।

ব্রহ্মব্বৈর্ত পুরাণ মতে ব্রাহ্মণবেশী বিশ্বকর্মার ঔরসে গোপককন্যাবেশী ঘৃতাচারীর গর্ভে নয় পুত্রের জন্ম হয়! তাঁরা হলেন মালাকার কর্মকার শঙ্খকার, তাঁতী, কুম্ভকার, কাংসকার, সূত্রধর, চিত্রকার এবং স্বর্ণকার।

উড়িষ্যায় মহারানা , মাদ্রাজে তকচন, মুম্বাইয়ে সুতার ও বড়িগ, রাজস্থানের ক্ষতি, উত্তর-পশ্চিম ও মধ্যপ্রদেশে বড়হই, এই রকম নানা নামে পরিচিত থাকলেও পশ্চিমবঙ্গে সূত্রধর ভাস্কর শর্মা মিস্ত্রি কর এই রকম নানা পদ অভিযুক্ত মানুষদের বোঝায়।
তবে পেশাভিত্তিক এই শিল্পকর্ম হার মানছে বেকারত্বের কাছে। অল্প দামে বিপুল চাহিদা, এবং মানব কল্যাণে বিজ্ঞানের প্রভূত উন্নতি অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছে বর্তমান পরিস্থিতির। একদিকে অল্প দামে, স্বল্প সময়ে সাধ* সাধ্যের মধ্যেই অন্যদিকে শিল্পনৈপুণ্যতা আঁকড়ে ধরে থাকতে চান কিছু শিল্পী। তা সে বয়ন শিল্প, নির্মাণ শিল্প, সহ বিভিন্ন ছোটো মাঝারি বা বড় যেকোনো ধরনের শিল্প হোক না কেনো।

Leave a Reply