মলয় দে, নদীয়া:-..সারা পৃথিবী জুড়ে এখনও চলছে কুসংস্কার । শিক্ষাঙ্গনে এত বিজ্ঞান পড়ছে, তবুও তারা কি সত্যি সত্যি বিজ্ঞান ও যুক্তির ভেতরের কথাগুলো বুঝতে পারছে, নাকি ক্রমশ কুসংস্কার ও ধর্মান্ধতার শিকার হয়ে পড়ছে ? এর ফাঁক দিয়ে লাগামছাড়া ভাবে বেড়ে চলেছে ধর্ম ও চিকিৎসার নামে বিচিত্র রকমের লোক ঠকানো ব্যবসা। এই পরিপ্রেক্ষিতে মানুষের কাছে বিজ্ঞান, যুক্তি ও মানবতার বার্তা পৌঁছে দিতে ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি’র নবদ্বীপ শাখার উদ্যোগে নবদ্বীপ শহরে নির্ভীক সমিতির সভাগৃহে অনুষ্ঠিত হলো ‘বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সম্মেলন’। দীপক চক্রবর্তীর কন্ঠে বিপুল চক্রবর্তীর ‘মানুষের হাতে গড়া মানুষের দেবতারা’ গানটির মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। নবদ্বীপ শাখার স্থায়ী সভাপতি অধ্যাপক রাম সোম মহাশয় অসুস্থতার কারনে উপস্থিত হতে পারেননি। অনুষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্ব নেন গৌতম রায়। সভার অনুষ্ঠানে নবদ্বীপ শাখার কাজকর্মের খতিয়ান ও বিশিষ্ট লেখকদের লেখা সম্বিলিত স্মারক গ্রন্থ প্রকাশ করা হয়। এরপর শুরু হয় যুক্তিবাদী সমিতির নবদ্বীপ শাখার সম্পদাকের সম্পাদকীয় প্রতিবেদন পাঠ ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন। এরপর চলে বক্তাদের বক্তিতা। সমিতির সাধারন সম্পাদক দেবাশিস্ ভট্টাচার্য দীর্ঘ ও প্রাসঙ্গিক বক্তিতায় উঠে আসে বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদ কি, কেন সমাজে এর প্রয়োজন এবং ভুমিকা কি ইত্যাদি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নবদ্বীপের সকলস্তরের এবং নবদ্বীপের বাইরের সম্মানীয় ব্যক্তিবর্গ। চাকদহ বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক মঞ্চের সম্পাদক বিবর্তন ভট্টাচার্য, পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চের সভাপতি অমর ভট্টাচার্য, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি হালিশহর শাখার সম্পাদক প্রবীর ব্যানার্জি, অশোক নগর শাখার সম্পাদক দীপক চক্রবর্তী সহ অন্যান্য সম্মানীয় ব্যক্তিবর্গ।
নবদ্বীপ শাখার সম্পাদক প্রতাপ চন্দ্র দাস বলেন ,” বিজ্ঞানচেতনা বা বিজ্ঞানমনষ্কতার মূল কথাই হল বুঝতে শেখা, প্রশ্ন করতে শেখা আর যে-কোনও অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সচেতন হওয়া। যুক্তিবাদের প্রসার ও কুসংস্কারমুক্ত সমাজ গঠনের বার্তা সকলের কাছে পৌঁছে দিতেই বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সম্মলনের আয়োজন। ”
প্রতাপ বাবু আরও বলেন, ” বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে ভিন্ন ধর্মের মানুষদের মধ্য পরিকল্পনামাফিক তৈরী করা হচ্ছে অযৌক্তিক ক্রোধ, ভীতি, হিংসা, অবিশ্বাস ও সাম্প্রদায়িক মনোভাব। রমরমিয়ে চলছে ধর্মীয় বুজরুকদের শোষণ ও প্রতারণা। সংবাদ মাধ্যমের বিজ্ঞাপনের একটা বড় অংশ দখল করে থাকছে তন্ত্র-মন্ত্র-জ্যোতিষ ও ভুয়ো চিকিৎসার অসাধু ব্যবসায়ীরা। শিক্ষক-ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারদের আঙুলে শোভা পাচ্ছে জ্যোতিষের দেওয়া আঙটি, জামার তলায় লুকানো থাকছে তাবিজ-কবজ-মাদুলি। এইসকল কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসের বিরুদ্ধে মানুষের মধ্যে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিতেই আমাদের সকলের সমবেত প্রয়াশ এই সম্মেলন “