মলয় দে,,নদীয়া :- নদীয়া শান্তিপুর শহরের নতুনহাট অঞ্চলে শান্তিপুর এসকেএস লিমিটেড নামে একটি কৃষি সমবায় ব্যাংকে পাঁচ শতাধিক স্বনির্ভর গোষ্ঠী, দুই শতাধিক কৃষক গ্রাহক সহ প্রায় ১০ হাজার গ্রাহক আজ দুশ্চিন্তায়। সেভিংস একাউন্ট, গোষ্ঠীর বিভিন্ন একাউন্টে টাকা থাকা সত্ত্বেও তুলতে পারছেন না বেশ কিছুদিন যাবৎ।
এলাকা সূত্রে জানা যায় প্রায় দেড় কোটি টাকা তছরুপ করে ওই ব্যাংকেরই ম্যানেজার । এর আগেও গ্রাহকরা ব্যাংক ঘেরাও করলে আটকা পড়েন ব্যাংকের ১৪ জন স্টাফ, ঘটনাচক্রে ঐদিন থেকে ম্যানেজার উপস্থিত ছিলেন না গতকাল পর্যন্ত। ব্যাংকের কাজ প্রায় বন্ধ হওয়ার জোগাড়!
অন্যদিকে দীর্ঘ লকডাউনের কর্মহীন কৃষক, গোষ্ঠীর মহিলা সদস্যরা এবং সাধারণ গ্রাহকদের টাকা না দিতে পারায় অবরোধ করেন। গত ১৭ই অক্টোবর শান্তিপুর থানার ভরসায় তুলে নেন অবরোধ এবং ওই দিনই একটি লিখিত অভিযোগ করেন গ্রাহকরা। এরপর বোর্ড অফ দিরেক্টর এর পক্ষ থেকে ম্যানেজারকে সাসপেন্ড করা হয়। শাখার দায়িত্ব নেন ডিআরসিএস আধিকারিক ।সেই থেকে গতকাল পর্যন্ত ম্যানেজারের ঘরে তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে সমস্ত কম্পিউটার তথ্য এবং হিসাব ! ফলে সাধারণ মানুষকে জবাবদিহি করতে হচ্ছে কর্মচারীদের! অথচ তারা এ সম্পর্কিত বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান আমাদের।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ,গতকাল সকাল ১১ টা নাগাদ শান্তিপুর নতুন পাড়া এলাকায় ম্যানেজার প্রশান্ত হালদার এর বাড়ির সামনে শতাধিক গ্রাহক তাদের টাকা ফেরতের দাবিতে ধর্নায় বসেন এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তার বাড়ির বৃদ্ধ বাবা-মা এবং এক নাবালিকাকে ছাড়া কারোর দেখা মেলেনি, তাদের কাছ থেকে জানা যায় প্রশান্ত হালদার নিখোঁজ রয়েছেন সেই দিন থেকে। এরপর বেলা ১টা নাগাদ শান্তিপুর থানার প্রশাসন এসে পৌঁছালে, গ্রাহকের আশা প্রত্যাশা ব্যাপারে পুনরায় শান্তিপুর থানার উপর দায়িত্ব দেন। প্রশাসনিক খোঁজ তল্লাশি চলছে ম্যানেজারকে খুঁজে বের করার ব্যাপারে।
উপস্থিত গ্রাহকরা জানান, সামান্য মাইনের এক ব্যাঙ্ক ম্যানেজার শান্তিপুর , কল্যাণী, এবং কলকাতায় মোট তিনটি বিলাসবহুল বাড়ির মালিক। সেগুলো বিক্রি করে টাকা দিতে হবে প্রত্যেকের এমন দাবি তোলেন বিক্ষোভ থেকে।
ব্যাংকের এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার দেবাশীষ রায় জানান গতকালকে ডেপুটি রেজিস্টার অব করপোরেট সোসাইটির পক্ষ থেকে এক লিখিত নির্দেশে ম্যানেজারের অফিস ঘরের চাবি হস্তান্তর করার কথা বলা হলেও, সে ব্যাপারে কোনো সহযোগিতা করছেন না ম্যানেজারের বাড়ির সদস্যরা, ফলে গ্রাহকদের কাছে ব্যাংক কর্মীরা অপমানিত হচ্ছেন। দীর্ঘ তিন মাস মাইনে না পাওয়ার পর, চুরির অপবাদের ভাগীদার হতে হচ্ছে তাদের।