সেলফ মোটিভেশনাল ! ডকুমেন্টারি বানাতে কলকাতা থেকে দার্জিলিং ৭০০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটেই পাড়ি দিচ্ছে আবির

Social

মলয় দে নদীয়া :-আমরা বলি অনেক কিছু! করি কতটুকু? কথায় আছে “আপনি আচরি ধর্ম অপরে শিখাও”। কিন্তু বর্তমানে শেখানোর মানুষগুলি বাস্তবে ভিন্ন বৈপরীত্যআচরন দেখে শিক্ষণীয় বিষয় লঘু হয়ে যায়। অথচ যেমন কথা তেমন কাজ যদি হয়ে থাকে, তবে তা আরো আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। তাইতো বহুবছর আগেই কবি লিখেছিলেন, আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে, কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে।

কথার সাথে কাজের মিল রাখতে ৭০০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে সোদপুর থেকে দার্জিলিং এর পথে ২৬ বছরের এক যুবক আবির ভট্টাচার্য রওনা দিয়েছেন গত তিন দিন আগে। গতকাল চতুর্থ দিনে নদীয়ার কৃষ্ণনগরে আমাদের সাথে তার সাক্ষাৎ। বিভিন্ন সামাজিক বিষয়ে লেখালেখি এবং মোটিভেশনাল ভিডিও এবং বক্তব্য পোস্ট করে সমাজ গঠনের নেশা তার।তাই স্নাতক হওয়ার পর একটি বেসরকারি সংস্থার চাকরি ছেড়ে দেন , অবলীলাক্রমে।
তবে আবিরের কথা অনুযায়ী, তিনি এর আগেও যে মোটিভেশনাল বিষয় সোশ্যাল মিডিয়ায় উপস্থাপিত করেন, তা অন্যের অভিজ্ঞতা থেকে নয় সম্পূর্ণ আত্ম উপলব্ধি। এবারেও তিনি পারতেন কোন যানবাহনের সহযোগিতায় দার্জিলিং পৌঁছাতে, তবে সম্পূর্ণ একা অসহায় অবস্থায় অভিজ্ঞতা কেমন হয়, এত দূরের পথে বিভিন্ন ধরনের মানুষের সহযোগিতা অসহযোগিতা রসিকতা নানান অভিজ্ঞতাই হলো এবারে তার বিষয়। তবে কাজটা যে মোটেই সহজ নয় তা হারে হারে টের পেয়েছিল রওনা দেবার দু দিন বাদেই, এত দূরের পথ হিসাবে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী এমনকি রান্নার কিছু উপকরণ পর্যন্ত ছিল তার পিঠ ব্যাগে বর্ষার ছাতা দু জোড়া বাড়তি জুতো, টর্চ ওষুধপত্র সাময়িক বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বালিশ কাঁথা, তিন চার সেট জামা কাপড় সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ কেজির কাছাকাছি। যা বহন করে মাত্র দু দিনের মধ্যেই, অবশেষে একমাত্র পরিবার সদস্য বাবাকে ফোন করে নৈহাটি স্টেশন থেকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ১০ কেজি মতন লাগে যে রেখে বাকি সবটাই ফেরত দিয়ে দেন। তবে এ ধরনের পাগলামিতে বাবা একেবারেই যে খুশি তা নয় কিন্তু ছেলের উপর অগাধ বিশ্বাস সে আর যাই হোক খারাপ কিছু করবে না।
এরপরেও আরো দুটো দিন গেছে বিরামহীন হাটা , অর্থাৎ চার দিনের মাথায় পরশু প্রথম রাত্রিবাস করেছেন তার এক নিকট আত্মীয়র ধুবুলিয়ার বাড়িতে। তবে পথে বিভিন্ন ভলেন্টিয়ার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য, সুহৃদয় ব্যক্তির সান্নিধ্যে পায়ের ফোসকার ব্যথা কিছুটা উপশম হচ্ছে মানসিক পরিতৃপ্তির ফলে। বাড়ির থেকে পড়ে আসা ক্যানভাস জুতো ফেলে দিয়ে নদীয়ার উপর দিয়ে যাওয়ার সময়, বীর নগর থেকে একটি নরম অ্যাডিডাস জুতো কিনেছেন তিনি। আর যাত্রাপথ সময় সময় একটা আন্দাজ করেছেন ২২ দিনের মতো। অর্থাৎ আগামী কুড়ি তারিখের মধ্যে দার্জিলিঙে পৌঁছে যাচ্ছেন তিনি। যদিও ফেরার সময় তিনি যানবাহন ভাড়া করবেন। আর পথের নানান অভিজ্ঞতা, ভিডিও ক্লিপ সঞ্চিত রাখছেন self motivation এর আগামী লেখার জন্য।

Leave a Reply