রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের গুরুবাড়ী ও প্রাচীন শিবলিঙ্গ  

Social

অরুণজিৎ দত্ত,নদীয়া: সুপ্রাচীন শিবলিঙ্গ দর্শন রয়েছে নদীয়া জেলার সদর শহর কৃষ্ণনগরের মহারাজ শ্রী কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের গুরু’বাড়ি বহিরগাছিতে ।

সেখানকার লোকমুখে জানা যায় গুরু বাড়ির ইতিহাস । আসল গুরু বাড়ি বিলুপ্ত হয়েছে অনেক কাল আগেই , সেই ভিটে সংস্কারের পর তৈরী হয়েছে এই বাড়ি, যদিও এ-বাড়ির বয়স ও বহুকাল।

গুরু বাড়ির উল্টো দিকে একেবারে সামনাসামনি এই অতিপ্রাচীন শিব মন্দিরটি মহারাজা কৃষচন্দ্র রায়ের গুরু বংশের আদি নিদর্শন। গুরু-বাড়ির এইরকম আটটি শিব মন্দির ছিল এখানে ,কালের নিয়মে সাতটি মন্দির আজ সম্পূর্ণ বিলুপ্ত। শুধু এই অতিপ্রাচীন শিব মন্দির ও শিবলিঙ্গ বর্তমানে গুরু বাড়ির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের একমাত্র সাক্ষী ।

মহারাজা কৃষচন্দ্র রায়ের জন্ম আনুমানিক ১৭১০ সালে, তাঁর গুরুরও জন্মের আগে তাঁর বংশের প্রতিষ্ঠা করা এই শিব মন্দির। অতিপ্রাচীন তবে এই শিবলিঙ্গ!কালের যাত্রা পথে সবই নশ্বর, তবু দেবাদিদেব মহাদেব স্বয়ং এখানে প্রাচীন ইতিহাসের সত্যতা নিয়ে অধিষ্ঠিত ।

মন্দিরের পাশেই বিশাল এক প্রাচীন গুলঞ্চ গাছ – কতো প্রজন্মের কতো কালের কতো ঘটনার একমাত্র জীবন্ত সাক্ষী সে। আজও কি তরতাজা ! শরীর তার ফুলে ফুলে ভরা।গুলঞ্চ কাঁঠালিচাঁপা প্রজাতিরই গাছ, শুধু ফুল গুলো আকারে একটু বড় ও সাদা, ভিতরের হলদে ভাবটা কম । এ-স্থানে বাতাস জুড়ে শুধুই এই ফুলের সুবাস।

এই স্থানটির দু’দশ কদম পাশেই পণ্ডিত মধুসূদন তর্ক পঞ্চানন মহাশয়ের সেই বিখ্যাত টোলবাটা – যা কিনা পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পাদস্পর্শে ধন্য। সেখানে একটি পূজার বেদি ঘরও আছে।

বাহিরগাছি কৃষ্ণনগর থেকে আনুমানিক ২২-২৩ কিমি দূরে। কৃষ্ণনগর থেকে ধুবুলিয়া হয়ে মুড়াগাছা ১৮ কিমি , সেখান থেকে গুড়গুড়ি নদীর সাঁকো পার হলেই সাধনপাড়া । সেখান থেকে আর মাত্র ৫-৬ কিলোমিটার পথ পেরোলেই বহিরগাছি।

গুড়গুড়ি নদী পারাপারের আরো দুটি সাঁকোপথ রয়েছে এখানে। বহিরগাছিকে যা ধর্মদা নামক জায়গার সাথে যুক্ত করেছে । ফিরতি পথে সে পথ ধরে ধর্মদা’র মোড় থেকে ঘাটেশ্বরের রাস্তা। এলাকার বাড়ির আঙিনা পেরিয়ে রাস্তা যেন বাড়িগুলোর দুয়ার ধরে ধরে বড় রাস্তা চিনিয়ে দেয়।

Leave a Reply