নিউজ সোশ্যাল বার্তা, ৫ই নভেম্বর ২০১৯: নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পূজা মানেই আবেগ , নতুন নতুন ভাবনার সঙ্গে পরিচয় । জগদ্ধাত্রী পূজা কে কেন্দ্র করেই কৃষ্ণনগরের জনপ্রিয় সামাজিক গণমাধ্যম গোষ্ঠী “আমরা কৃষ্ণনগরবাসি” শুরু করেছে তাদের পূজা পরিক্রমা ২০১৯ ।
কৃষ্ণনগরের কিছু নির্বাচিত পূজাকে বিশেষ পুরস্কারে সম্মানিত করবে এই সামাজিক গণমাধ্যম গোষ্ঠী ।
বর্তমান যুগে যেখানে অণুপরিবারের কল্যানে সামাজিকতা অবলুপ্তির পথে, মূল্যবোধের অবক্ষয়, সমাজকে ধীরে ধীরে গ্রাস করছে, বিজ্ঞান যেখানে দিয়েছে “বেগ” কিন্তু কেড়ে নিচ্ছে “আবেগ”, সেই সামাজিক পটভূমিতে দাঁড়িয়ে সামাজিক গণমাধ্যম ব্যবহারকারীদের একটা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই এই গণমাধ্যম গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে স্থানীয় পৌরসভা ও জেলা প্রশাসনের সহায়তায় পরিবেশ ও সমাজ সচেতনতার দিকে নজর রাখতে একটি বিশেষ ও অভূতপূর্ব কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, কৃষ্ণনগরের শহরতলীর কিছু নির্বাচিত পুজোকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করার । তাদের এই প্রচেষ্টা আগামীতে পরিবেশ রক্ষার বিষয়টিতে নতুনভাবে আলোকপাত করবে । তবে পুরস্কারের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলি বিচারকমন্ডলীদের কাছে বিবেচ্য সেগুলি হলো:
১) যথাসম্ভব পরিবেশবান্ধব উপকরণ দিয়ে মণ্ডপ সজ্জা,
আলোকসজ্জায় পরিবেশ সচেতনতার উপর জোর দেওয়া ।
২) প্লাস্টিক ও থার্মোকল বর্জিত পূজার আয়োজন তদুপরি এবিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে পুজো আয়োজক সংস্থাগুলির ভূমিকা ।
৩) পুজা মণ্ডপে এবং সংলগ্ন এলাকায় শ্রুতিমধুর ও নিয়ন্ত্রিত স্বরে সংগীত/ঘোষণা ইত্যাদি এমন কি শব্দযন্ত্রের ব্যবহার এবং শব্দদানবের হাত থেকে সংলগ্ন এলাকাকে রক্ষায় আয়োজক সংস্থার ভূমিকা ।
৪) অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো/এলাকার মেধাবী দুঃস্থ ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে দাঁড়ানো তথা এলাকার শিল্পীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে সামাজিক দায়িত্ব পালনে আয়োজক সংস্থার ভূমিকা ।
৫) এলাকার কৃতি মানুষদের (মেধাবী ছাত্রছাত্রী, শিল্পী, ক্রীড়াবিদ, শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, ইত্যাদি) পুজার দিনগুলিতে সামনে তুলে ধরে পরবর্তী প্রজন্মকে উৎসাহিত করা।
৬) পুজায় আগত সকল দর্শনার্থীকে সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে প্রতিমা ও মণ্ডপসজ্জা দেখার সুযোগ করে দেওয়া, সম্ভব হলে কৃষ্ণনগরের পূজা পরিক্রমার মানচিত্র বড়ো করে মণ্ডপের কোনোস্থানে দৃশ্যায়নের বন্দোবস্ত বিশেষত বহিরাগত দর্শনার্থীদের কথা বিবেচনা করা ।
৭) পূজামণ্ডপে প্রাথমিক চিকিৎসার উপকরণ সামগ্রী, অগ্নিনির্বাপক সামগ্রীর সুনিশ্চিত করা ও প্রয়োজনে তার ব্যবহারিক প্রয়োগ ।
৮) বৃদ্ধ, মহিলা, শিশু ও বিশেষভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ আয়োজন ।
৯) ঘট বিসর্জন ও প্রতিমা নিরঞ্জনে প্রশাসন নির্ধারিত নিয়মাবলী ও সময়ানুবর্তিতার যথাযথ পালন ।
১০) পূজামণ্ডপে ও সংলগ্ন এলাকায় ধূমপান, মদ্যপান, তামাকজাত ও অন্যান্য নেশাদ্রব্য বর্জনের জন্য লিখিত প্রচার,
এছাড়াও অন্য কোনো বিশেষ পদক্ষেপ যা পরিবেশ ও সমাজের পক্ষে মঙ্গলজনক সেটিও পৃথক গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে ।
এই গণমাধ্যম গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে পূজা পরিক্রমা । তবে তার ফলাফল জানতে আমাদের আর কয়েকটা দিন অপেক্ষা করতেই হবে । “আমরা কৃষ্ণনগর বাসি” নামে এই সামাজিক গণমাধ্যম এক নতুন দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করলো । সমাজ গড়ার কাজে সামাজিক গণমাধ্যমের ভূমিকা সত্যিই অপরিসীম ।