সোশ্যাল বার্তা : করোনা আবহে একাধিক রদবদল হচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন পঁচেটগড় রাজবাড়ির ৪৫০ বছরের দুর্গাপুজোয়। সরকারি বিধি মেনেই পুজিত হবে মা। রাজাদের সেকেলে রাজত্ব আজ আর না থাকলেও রাজবাড়ির দুর্গাপুজোয় আজও রয়ে গেছে সেকালের পুজোর প্রাচীন নিয়মকানুন। প্রতিবছর ষষ্ঠী থেকে রাজবাড়ির পুজো ঢাক, ঢোল, কাঁসর-ঘন্টা ধ্বনি সহযোগে পঁচেটগড় রাজবাড়ির প্রাচীন পুকুর থেকে দুর্গাপুজোর ঘট স্থাপন করা হত। মূলত ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত চলত রাজবাড়ির পুজো।
ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায় ওড়িষ্যার আটঘর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন বাড়ির আদি পুরুষ কালামুরারি দাস মহাপাত্র। জগন্নাথ দেবের সামনে নিত্যদিন সঙ্গীত পরিবেশন করতেন তিনি। সেই সঙ্গীতেই মুগ্ধ হয়ে রাজা তাকে মন্দির পরিচালনা র দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
মন্দিরের পাশে পেয়েছিলেন জমি। পরবর্তী সময় জাহাঙ্গীর এর নজরে পড়ে যান। তাকে বাংলা, বিহার ও তাম্রলিপ্ত বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব দেন মোঘল সম্রাট। কাজটি তিনি সূচারুভাবে করেন ও পটাশপুর এলাকার খাঁড়ে বিশাল গড় নির্মাণ করেন তিনি। পরবর্তীত সময়ে উদ্ধার হয় একের পর এক শিবলিঙ্গ। ঐ শিবলিঙ্গ দিয়েই কালামুরারি দাস মহাপাত্র তৈরি করেন পঞ্চেশ্বর মন্দির। ধিরে ধিরে পঞ্চেশ্বর নামটি প্রচার হতে থাকে। এখানেই তিনি তৈরি করেন পঁচেটগড় রাজবাড়ি। ও পরবর্তীত সময়ে দূর্গাপুজো শুরু করেন।
তবে সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন এসেছে এ বাড়ির পূজোয়। কয়েক বছর পর রাজপরিবার শৈব থেকে বৈষ্ণব হয়ে যান। ফলে বন্ধ হয়ে যায় মুর্তি পূজো। ঘট পূজোর প্রচলন হয়। তবে থাকে চাল চিত্র। প্রতিবছর পূজোর একমাস আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এবছর পরিস্থিতি একেবারেই অন্যরকম। দু একজনকে নেয়েই শুরু হয়েছে দূর্গা পূজোর প্রস্তুতি।
প্রতি বছর আত্মীয় স্বজন , এলাকাবাসীর সমাগমে গমগম করতো বাড়ি কিন্তু বছর কারা আসবেন আর কারা আসবেন না সেই নিয়েই তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। কমিয়ে দেওয়া হয়েছে পূজার জাঁকজমক ও সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনেই সুষ্ঠভাবে সম্পূর্ণ হবে এবারের পূজো।