মলয় দে নদীয়া :- চন্দ্রমূলি, ভূঁই চম্পা, সুরভি আদা, এলাকাভিত্তিকচাষীদের কাছে বিভিন্ন নামে পরিচিত হলেও বাংলাদেশ এবং ভারতের একাঙ্গী বা একানি নামেই বেশি পরিচিত বীরুৎজাতীয়, কন্দগোত্রীয় এই উদ্ভিদ। বাংলাদেশ থাইল্যান্ড মালয়েশিয়া সহ সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় এই চাষের ব্যাপ্তি দেখা যায়। পর্ণমোচী গাছের পাতা শীতকালে ঝরে পড়ে মাটিতে মেশে রাইবোজোম। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে মে মাসে দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত একাঙ্গী বপনের উপযুক্ত সময় , হেক্টরপ্রতি বারোশো থেকে চৌদ্দশ কেজি বীজ এর প্রয়োজন। জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মাস অর্থাৎ প্রায় নয় মাস পর হেক্টরপ্রতি ১২ থেকে ১৫ টন ফলন পাওয়া যায়।
প্রতি বিঘায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হলেও ঠিকঠাক চাষ করতে পারলে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা ঘরে উঠতে পারে কৃষকের। অত্যন্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে এই গাছের তাই পোকার আক্রমণ খুব একটা না ঘটলেও গাছের গোড়ায় উঁচু করে মাটি দিয়ে রাখতে হয় সব সময় এবং সেই মাটিতে জলীয় ভাব থাকা প্রয়োজন। তবে অতিরিক্ত জলে কন্দ পচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এই ফসলের মধ্যে বিদ্যমান সুগন্ধি পারফিউম এবং কসমেটিক শিল্পে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হয়। মাছ ধরার ক্ষেত্রে এই ফলের ব্যবহার আজও অদ্বিতীয়। তবে ভেষজ এই কন্দের ঔষধি গুনও অব্যর্থ! পাকস্থলীর আসা রাতে রক্ত পরিষ্কারক হিসেবে ঠান্ডা জনিত রোগ নিরাময়ে যথেষ্ট ব্যবহৃত হয় ঔষধ তৈরিতে। মালয়েশিয়াতে মসলা ফসল হিসেবে চালের সুগন্ধি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
অল্প হলেও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় এই চাষ চোখে পড়ে ,তবে নদীয়ায় বেতাই, করিমপুর, তেহট্ট, কৃষ্ণনগর সহ বেশ কিছু জায়গায় ব্যাপক ভাবে চাষ লক্ষ্য করা যায়।
এইরকমই কৃষ্ণনগরের পাল পাড়ায় সন্ধ্যা মাঠপাড়া এলাকার এক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেলো সবসময় মাটির সিক্ত রাখার জন্য, এবং অতিরিক্ত জল জমে গেলে তা নিকাশির জন্য সেচের প্রয়োজন হয় খুব বেশি, যেটা চাষির কাছে অত্যন্ত ব্যয় সাপেক্ষ ! তাই এ ধরনের সুবিধা পেলে এ ধরনের চাষ করা লাভজনক।