মলয় দে, নদীয়া:- আজ থেকে প্রায় ৩হাজার বছর আগে চীন দেশ থেকে পানি ফলের চাষ হয়ে আসছে বলে ধারণা করা হয় , ভারত-বাংলাদেশ জাপান শ্রীলংকা ইন্দোনেশিয়া ফিলিপাইন আফ্রিকা বিভিন্ন দেশে এই ফলের চাষ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্থির বাআবদ্ধ স্রোতবিহীন জলাশয়ে এই চাষ হওয়ার কারণে হকার ভাইদের আদুরে নাম জলে ভাজা সিঙ্গারা !সকলে অবশ্য পানিফল বললেই চিনি। কাঁচা, সেদ্ধ করে তরকারি প্রস্তুত করে এমনকি শুকিয়ে আটা করে তা দিয়ে রুটি পিঠে কেক বিস্কুট হিসাবে চীনদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং আবশ্যকীয় খাদ্য তালিকার মধ্যে পড়ে। ৯০%কার্বোহাইড্রেট , ৬০% শর্করা খাদ্যগুণ ছাড়াও রাইবোফ্লাভিন ভিটামিন-বি, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন, ক্যালসিয়াম সহ বিভিন্ন খাদ্যগুণ অন্তর্নিহিত থাকে এই ফলে। শুধু খাদ্যগুণ নয় এলার্জি, হাত পা ফোলা, উদারাময় তলপেটে ব্যথা র মতো অনেক রকম ঔষধি গুণও আছে এই ফলে।
আষাঢ় মাস থেকে ভাদ্র আশ্বিন মাস পর্যন্ত লাগানো বর্ষজীবী চারাগাছ ফল দেয় ফাল্গুন মাস পর্যন্ত। ৬০ থেকে ৬৫ দিনের পর নীল বা হালকা বেগুনি সাদা অসাধারণ দেখতে ৪টি পাপড়ি যুক্ত উভয়লিঙ্গ ফুল হয় । ফুল আসার ১৫থেকে ২০দিনের মধ্যে ফল তোলার মতো পরিপক্ক হয় প্রাথমিকভাবে লাল পরবর্তীতে সবুজ এবং পরিপক্ক হলে কালো রং ধারণ করে। জল পরিশোধন করার অদ্ভুত ক্ষমতা থাকে এই গাছে ফলে মাছ চাষের জলাশয় এই চাষ করলে উপকৃত হন মৎস্যচাষীরা। প্রতি বিঘায় দুই মেট্রিকটন ফলন পাওয়া যায় যার বাজারদর ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা এবং খরচ হয় ৮-১০হাজার টাকা ।
নদীয়ার কালীনারায়নপুর, শান্তিপুর, কৃষ্ণনগর, করিমপুর, সহ বেশ কিছু জায়গায় সারাবছর মূলত পানিফল চাষ করেন এমন কৃষকের সংখ্যাও কম নয়। তবে বেশিরভাগ ভূমিহীন কৃষক অন্যের জমি লিজ নিয়ে এধরনের চাষ করে থাকেন, এবং সহকারী উপযুক্ত প্রশিক্ষণ বা বীজ সার ঔষদে সহযোগিতা না থাকায় সেভাবে লাভের মুখ দেখতে পান না অনেকেই।