মলয় দে, নদীয়া :-গত ৮ই সেপ্টেম্বর দিশারী পরিবার উদ্যোগ নিয়েছিল নদীয়ার আদিবাসী গ্রামগুলোতে করম রোপনের। উদ্দেশ্য আদিবাসী গ্রামগুলোতে তাদের ঐতিহ্য বজায় থাকুক এবং নতুন প্রজন্ম তাদের সংস্কৃতি কে জানুক।গত ১৬ই সেপ্টেম্বর মাজদিয়ার ঐতিহাসিক গ্রাম কুঠী পাড়ায় রাবণ সর্দারের নেতৃত্বে করম পরব উদযাপিত হয়। এই আদিবাসী গ্রামে নীলকর সাহেবদের কুঠি থাকায় এই গ্রামের নাম কুঠিপাড়া আজও গ্রামের দক্ষিণ প্রান্তে সাহেবদের কুঠির অস্তিত্ব দেখা যায়। গতকাল এই করম পরবকে ঘিরে হাজারো মানুষের সমাগম ঘটে। নদীয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আদিবাসী শিল্পীরা উপস্থিত ছিলেন। করম পরব এর রীতি অনুযায়ী নাচ গান এবং ধামসা মাদলের বোলে পরিবেশ মুখরিত হয়ে উঠেছিল। উপস্থিত নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা জানায় তারা প্রথম এই করণ গাছটিকে দেখে এবং করম পূজা সম্বন্ধে জানতে পারে। দিশারী পরিবার উদ্দেশ্য এখানেই সার্থক। আমরা মনে করি করম রোপনের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে গতকাল নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা করম পূজার মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রতিজ্ঞা করেছে আগামী বছর থেকে তারা এই উৎসবের দায়িত্ব নেবেন এবং এই উৎসবকে ঘিরে আরও তথ্য তারা জানার চেষ্টা করবেন। তারা মনে করে নতুন প্রজন্ম এগিয়ে আসলে এই সংস্কৃতি রক্ষা পাবে। নদীয়ার বিভিন্ন প্রান্তে তাদের নিজেদের মতো করে পালন করেছে এই দিনটি । যার মধ্যে শান্তিপুর ব্লকের গয়েশপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মানিক নগর গ্রাম। প্রশাসনিক ভাবে শান্তিপুরের অন্তর্গত হলেও অবস্থানগত কারনে মূল শান্তিপুর থেকে নদী পার হয়ে পৌঁছাতে হয় বর্ধমান জেলার সন্নিহিত নদীয়ার শেষ প্রান্তের এই গ্রামটিতে, যেখানে প্রায় ৬০% আদিবাসী সম্প্রদায় করেন । ভাদু টুসুর মত করম পুজো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরবের মধ্য পড়ে। তবে পুরুলিয়া ছোটনাগপুর অঞ্চল থেকে এতদিন যাবৎ এই গাছের ডাল নিয়ে এসে পুজো করা হতো। বর্তমানের দিশারী সহযোগিতায় এই গাছ রোপিত হয়েছে নদীয়ার বিভিন্ন আদিবাসী গ্রামে।