রায়গঞ্জঃ মুক ও বধিরতা যে পড়াশোনার ক্ষেত্রে কোন বাধা হতে পারেনা, সেটা প্রমান করলো উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শেফালী বিশ্বাস। গোয়ালপোখরের নন্দঝাড় গ্রামের মুক ও বধির মেয়ে এই শেফালী বিশ্বাস। মুক ও বধির হওয়ার কারনে ছিল না কোন প্রাইভেট টিউটর। নিজে যতটুকু বুঝতো ততটুকুই পড়াশোনা করতে পেরেছে এবং তা দিয়েই মাধ্যমিক পাস করে ও দেখালো যে, ইচ্ছে শক্তি কতটা প্রখর হলে এমনটা সম্ভব।ওই মেয়ের প্রাপ্ত নম্বর ২৮৪ হলেও এলাকার বাসিন্দাদেরছে। কারণ ওই মেয়ে নিয়মিত স্কুলে গেলেও মাস্টারমশাই বা দিদিমণিরা কি বোঝাচ্ছেন, তা ছিল ওর বোধগম্যের বাইরে। সে যখন ভালোভাবে শুনতে পারে না এবং বুঝতে না পারলেও বলতেই পারে না তখন কিভাবে এগিয়ে যাবে ওর পঠন-পাঠন? তবুও ওর বেশ কয়েকজন সহপাঠী এবং এলাকার শিক্ষক তথা খেলোয়াড় চন্দন পালের মতন মানুষরা, যারা ওর মনোবল সব সময় বাড়ানোর কাজ করে গিয়েছেন।
শেফালির বাবা সুজিত বিশ্বাস বাজারে মুরগির মাংস বিক্রি করেন। সেখান থেকে যে ছোট্ট আয়, আসে তাতে ঠিকভাবে সংসার চলে না। তাই নিতান্ত অবহেলায় সঙ্গেই কাটছিল ওই মেয়ের পড়াশোণা। শিক্ষক তথা ফুটবলার চন্দন পাল বলেন, “বিষয়টা খুব একটা সহজ ছিল না।কিন্তু তার কাছে ছিল চ্যালেঞ্জ। আর তাই নন্দঝাড় ছাত্র সমাজের মহিলা ফুটবল টিমে শেফালীকে অন্তর্ভুক্ত করার পর সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। তাই এই ফলাফল পেয়ে শুধু ওই মেয়ে নয়, খুশি গ্রামবাসীরাও। প্রতিবন্ধকতার লড়াইয়ে পঠন-পাঠনের সঙ্গে সে একজন ভালো ফুটবল খেলোয়াড় হয়ে উঠেছে”।