৯৫ বছরের বৃদ্ধা মায়ের সঞ্চিত অর্থ ভাগ করে নিয়ে ঘর থেকে বের করে দিল সন্তানেরা পাশে দাঁড়ালো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য 

Social

মলয় দে নদীয়া :- শুভ “মাতৃ দিবস” এই কথাটি মাত্র কয়েক দিন আগে সবার মুখে মুখে, সমাজিক মাধ্যমে খুব শোনা গেলো ৷ কিন্ত হায়রে মোর দুর্ভাগা দেশ ! আমরা দেশকে মা বলি আবার সেই দেশের মায়েদের আজও পায়ের তলায় দাবিয়ে রাখি ৷ মাতৃ দিবস উদযাপনের কয়েক দিন পরেই এক “মায়ের” লাঞ্ছিত হওয়ার একটি ভয়ংকর ঘটনা সামনে এলো নদীয়ার শান্তিপুরে ৷

শান্তিপুরের মাতাল গড় এলাকায় লাহিড়ী পুকুরের পাশে বসবাস করা ৯৫ বছরের এক বৃদ্ধা তার মেয়ের কাছেই থাকেন ৷ বৃদ্ধা এক সময় বেশ কিছু সম্পত্তির মালিক ছিলেন ৷ ঐ বৃদ্ধা তাঁর সব সম্পত্তি বসত বাড়ী বিক্রি করে যা টাকা পেয়েছিলেন সবটাই এক ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে ভাগ করে দেন ৷ সহায়, সম্বলহীনা মাকে ঘর থেকে নামিয়ে এক মেয়ের বাড়ী রেখে যায় অন্য ছেলে মেয়েরা ৷

কিন্তু সেই মেয়ে প্রতিদিন মা-কে মারধোর, গালিগালাজ তো করেই,,উপরী পাওনা হিসেবে খেতে না দেওয়া,ঘর থেকে বের করে তালা দিয়ে দেওয়ার মতো অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ পাশাপাশি বার্ধক্য ভাতার টাকাটাও তুলে দিতে হয় ৷ এই মর্মান্তিক ঘটনা এলাকার কিছু ছেলে মেয়ে মিলে নদীয়ার শান্তিপূরের সমাজকর্মী মোহর দে বিশ্বাস ,সঞ্জিত কাষ্ঠ, দীপান্বিতা, শুভঙ্কর ও গৌরী রায় নন্দীকে জানান ।

খবর পাওয়ার পর তাঁরা দল বেঁধে ছোটেন সেই বৃদ্ধার কাছে। সেখানে এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে শান্তিপূর থানার অফিসার ইনচার্জ সুমন দাসকে মৌখিকভাবে ঘটনাটি জানান বলে ঐ সমাজ কর্মীরা জানান । বৃদ্ধার মেয়ে খেতে দেবে না এবং থাকতে দেবেনা বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বলেও জানান ঐ সমাজকর্মীরা । ঐ সমাজকর্মীরা শান্তিপুরের আর এক সংস্থা যারা নিয়মিত এলাকার ভবঘুরে ও সহায় সম্বলহীন মানুষদের খাওয়ান সেই নবজাগরন সংস্থার সম্পাদক রনা প্রসাদ ভট্টাচার্যকে বিষয়টি জানালে তারা ঐ বৃদ্ধাকে খাওয়ানোর দায়িত্ব নেন ৷ বর্তমানে নবজাগরন সংস্থা ঐ বৃদ্ধাকে দিনে দু বেলা খাবার দিয়ে আসেন বলেও জানা যায় ৷

যদিও মারধোর, খেতে না দেওয়া, বার্ধক্য ভাতা নিয়ে নেওয়া কিংবা ঘরে তালা দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ বিদ্যার মেয়ে  অস্বীকার করছেন ৷ আবার কখনো নিজেকে মানসিক রুগী বলে তাকে বিরক্ত না করার কথা বলছেন ৷

এই প্রসঙ্গে সমাজকর্মী মোহর দে বিশ্বাস  বিশ্বাস জানান , বৃদ্ধার পাশে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা রয়েছেন । প্রশাসনের সঙ্গে তারা এই বিষয়ে কথা বলেছেন ও  প্রশাসনিক ভাবে চেষ্টা চলছে বৃদ্ধা যাতে তার ছেলের কাছে থাকতে পারেন ।

Leave a Reply