রায়গঞ্জঃ করোনা ভাইরাসের ‘ভয়ে’ উত্তর দিনাজপুরে অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের একাংশ রোগীদের কোয়রান্টিন সেন্টারে নিয়ে যেতে চাইছেন না বলে অভিযোগ। কিন্তু তাতে দমেননি হেমতাবাদ ব্লকের দক্ষিণ হেমতাবাদের বাসিন্দা, জেলার একমাত্র মহিলা অ্যাম্বুল্যান্স চালক সেলিনা বেগম। নিয়মিত কাজ করে চলেছেন তিনি। তবে তাঁর থেকে পরিজনদের মধ্যে যাতে কোনও ভাবেই সংক্রমণ না ছড়ায়, তা নিয়েও সতর্ক রয়েছেন দুঃস্থ পরিবারের বছর ছাব্বিশের ওই তরুণী।
তিনি জানিয়েছেন, লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে তিনি বাড়িতে ফিরছেন না। থাকছেন হেমতাবাদ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একটি ঘরে। সেলিনা জানান, তিনি নিয়মিত এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার রোগী ও প্রসূতিদের অ্যাম্বুল্যান্সে হেমতাবাদ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পৌঁছে দিচ্ছেন।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধানের বক্তব্য, জেলার অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের একাংশ সাধারণ রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছে দিতে চাইছেন না বলে অভিযোগ উঠছে। এই পরিস্থিতিতে সেলিনা নিজে সতর্ক থেকে তাঁর কর্তব্য পালন করে নজির গড়েছেন। সেলিনার বাবা কৃষিজীবী নাজিরুদ্দিন আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। মা সাজেদা বেগম ও দিদি কোহিনুর থাকেন বাড়িতেই। সেলিনা জানান, তাঁর বাবা অসুস্থ হয়ে কর্মহীন হওয়ার পর থেকে সংসারে অনটন শুরু হয়। হাল ধরতে ২০১৮ সালের গোড়ায় তিনি অ্যাম্বুল্যান্স চালানোর সিদ্ধান্ত নেন। মাসদুয়েক গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়ে ২০১৮ সালের ২৭ জুলাই হেমতাবাদ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অ্যাম্বুল্যান্স চালকের কাজে যোগ দেন। এখন প্রতি মাসে তাঁর গড়ে ১৫-১৮ হাজার টাকা রোজগার হয়। সেলিনার কথায়, ‘‘ভাইরাস সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সব সময় মাস্ক ও টুপি পড়ে অ্যাম্বুল্যান্স চালাচ্ছি। রোগী ও প্রসূতিদের হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার পরে স্যানিটাইজ়ার দিয়ে হাত ও অ্যাম্বুল্যান্স পরিষ্কার করছি। তবে সতর্কতা হিসেবে প্রায় এক মাস বাড়িতে ফিরিনি।’’