Wall of Humanity / মানবিক প্রাচীর

Social

নিউজ সোশ্যাল বার্তা : গত পাঁচমাসে রানাঘাটের মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে নামটি। আজ থেকে বছর তিন আগে ইরানে প্রথম গড়ে ওঠে Wall of Humanity. ভারতের এলাহাবাদ, মাইসোর, কলকাতা হয়ে দশম Wall of Humanity গড়ে উঠেছে রানাঘাটের ষষ্ঠীতলায়। ষষ্ঠীতলার ব্রজবল্লব মন্দিরের পাশের গলিতে ১৮জুন থেকে পথচলা শুরু করেছে, “মানবিক প্রাচীর”; “Wall of Humanity”

যার মূল উদ্দেশ্য- নিজের অব্যবহৃত জামা কাপড় দান করা এবং যার প্রয়োজন নিজে হাতে সংগ্রহ করা।
দেখতে দেখতে এক হাজার জামা কাপড় পৌঁছে গিয়েছে সাধারণ মানুষের সংগ্রহে। এবং যারা নিজেদের অপ্রয়োজনীয় জামা কাপড় দিয়ে গিয়েছেন তাদের সংখ্যাটাও ৭০ ছুঁয়েছে। রানাঘাটের এবং বিশেষ করে ষষ্ঠীতলার সাধারণ মানুষ প্রথম দিন থেকেই নিয়মিত ব্যবধানে নিজেদের অপ্রয়োজনীয় জমা কাপড় রেখে যাচ্ছেন এবং বর্তমানে সেই তালিকায় হিজুলী, আইশতলা, আনুলিয়া ও যুক্ত হয়েছে।
চাকরিসূত্রে পরিবার সহ রানাঘাট ছেড়ে চলে যাওয়ার আগে এক ভদ্রলোক রানাঘাটে কাটানো ১০বছরের স্মৃতি ভরা কয়েক ব্যাগ ভর্তি জামাকাপড়, সাথে ব্যাগ, টুপি, সোয়েটার সহ সাজিয়ে দিয়ে গিয়েছেন Wall of Humanity কয়েক মাস আগে। পুজোর আগে একজন মহিলা দিয়ে গিয়েছিলেন ১২টি নতুন জামা সেগুলোও সাজানো ছিলো Wall of Humanity তে। হাসি ফুটেছে ১০টি পরিবারে। ফোন করে এক পেটি জামা আর শাড়ি দিয়ে গিয়েছেন এক ভদ্রলোক। সেগুলোও পৌঁছেছে ঘরে ঘরে। এখানেই শেষ নয়,পুজোর দিনগুলোয় আর সি এন্ড এসি এর মন্ডপ থেকে বেরিয়ে উৎসাহী মানুষের Wall of Humanity দর্শন, আর পুজোর ৫দিনে প্রায় ৮১টি জামা কাপড় সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া সার্থক করেছে এই যাত্রাপথ।

রানাঘাট আর সি আন্ড এ সি ক্লাবের সদস্যদের ভূমিকা অপরিসীম; নিয়মিত Wall of Humanity কে পর্যবেক্ষণে রাখার দায়িত্ব নির্দ্বিধায় পালন করে করেছে। আর সি আন্ড এসি ক্লাবের সভাপতি শচীন্দ্রনাথ দাশ পুরো বিষয়টি শুরু থেকে তত্ত্বাবধান করছেন। তার কথায় ” মানুষকে স্বাধীন ভাবে নিজের পছন্দের জামা কাপড় নিজের সময় মতো বেঁচে নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে Wall of Humanity বা মানবিক প্রাচীর। দিকে দিকে বস্ত্র বিতরণ উৎসবে নিজের পছন্দের কোনো গুরুত্ব থাকেনা, অনেকে বিনা পয়সার বাজার করে প্রকাশ্য স্থানে জিনিস দেয় সেখানেও দিনে দুপুরে জমকালো জায়গায় ক্যামেরার সামনে নিজের পছন্দের জিনিস পেতে লজ্জায় পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে, এখানেই ব্যতিক্রম মানবিক প্রাচীর। ”
   আশা রাখি আগামী দিনে বহু মানুষের প্রয়োজনীয় জামা কাপড়ের সঙ্গী হয়ে উঠবে এই মানবিক প্রাচীর। রানাঘাট তথা পার্শ্ববর্তী এলাকার সাধারণ মানুষের মানবিকতায় এবং অপ্রয়োজনীয় জামা কাপড়ে ভরে উঠুক Wall of Humanity এবং সেই জামা কাপড় গাঁয়ে উঠুক যাদের দরকার।