নিউজ সোশ্যাল বার্তা: শত সহস্র শহীদের রক্তের বিনিময়ে দেশ সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি পেয়েছে । একটা সময় কত কষ্ট সহ্য করতে হয়েছিল সেই সব পরিবারের সদস্যদের । পরিবারে সদস্যদের চোখে-মুখে স্বপ্ন ছিল একটাই, দেশকে স্বাধীন করতে হবে৷ স্বাধীন হয়েছে দেশ ৷ কিন্তু সেই শহীদ পরিবারের সদস্যরা কেমন অাছেন ?
১৩ই এপ্রিল ২০২০ উত্তরবঙ্গ সংবাদ এর খবর অনুযায়ী লকডাউনে একবেলা না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে প্রয়াত বিপ্লবী প্রফুল্ল চাকির নাতনি মাধবী তালুকদারকে৷
ছোট ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে মাধবীদেবী দিনাজপুরের ফুটপাথে একটি কুঁড়েঘরে থাকেন৷ ঝাঁপতোলা কুঁড়েঘরে আলো-বাতাস ঢোকে না বললেই চলে৷ একটি চৌকিতে রান্না করা, খাবার খাওয়া, এমনকি ঘুমোতেও হয়৷ ছোট ছেলে বিভিন্ন জায়গা থেকে কচুর শাক তুলে বাজারে বিক্রি করে৷ মাধবীদেবী মন্দিরে কাজ করেন৷ মা ও ছেলের সামান্য আয়ে কোনওরকমে দিন পার হয়ে যায়৷ কিন্তু লকডাউন শুরু হওয়ায় মন্দির বন্ধ৷ ভালো করে বাজার না-লাগায় শাকও বিক্রি হয় না৷ এমন অবস্থায় এখন তাঁদের প্রবল সমস্যায় পড়তে হয়েছে৷ একবেলা খেয়ে না খেয়ে পার করতে হচ্ছে দিন৷
তিনি বলেন, ‘আমার দাদুরা ছিলেন চার ভাই৷ আমার নিজের দাদু ছিলেন প্রতাপ চাকি৷ আর ছোট দাদু ছিলেন বিপ্লবী প্রফুল্ল চাকি৷ তিনি বিয়ে করেননি৷ তখন আমার বয়স ১০-১১ বছর৷ সেই সময় ছোট দাদু ব্রিটিশদের তাড়ানোর জন্য স্বদেশী আন্দোলন করতেন৷ আমি লুকিয়ে লুকিয়ে দাদুর আস্তানায় গিয়ে সাহায্য করতাম৷ গঙ্গারামপুরে ভালো ঘরে বিয়ে হয়েছিল৷ কিন্তু এখন এই ফুটপাথে থাকি৷ ছোট ছেলে বাজারে কচুর শাখ বিক্রি করে৷ যা আয় হয় তা দিয়ে কোনওরকমে চলে যায়৷’
এই খবর নজরে আসার পরেই এগিয়ে আসে নদীয়ার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হোয়াইট ঈগলস এর সদস্যরা । সংস্থার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় মাননীয় গৌতম দে এবং উত্তরবঙ্গ সংবাদ এর সাংবাদিক মাননীয় চয়ন হুর সঙ্গে । গত ২০শে এপ্রিল ২০২০ তাদের মাধ্যমেই বৃদ্ধার জন্য এক মাসের রেশন খাদ্য সামগ্রী পৌঁছানো হয় । সংগঠনের তরফ থেকে যাদের সাহায্য ছাড়া এই কাজ সম্ভব হত না সেই গৌতম দে ও চয়ন হুর কে অসংখ্য ধন্যবাদ জানানো হয় ।
এ প্রসঙ্গে সংগঠনের অন্যতম শমীক গুপ্ত বলেন “ভালোবাসা ও প্রচেষ্টা থাকলে দূরত্ব কোনোদিনই বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনা। আপনারাও নিজেদের সাধ্য মতন ওনার পাশে এসে দাঁড়িয়ে অতীতকেও অনুভব করতে পারেন”।