মলয় দে নদীয়া:- ছোটবেলা থেকে বড় হয়েছে অথচ গোপাল ভাঁড়ের গল্প শোনানি! এমন মানুষ মনে হয় পাওয়া যায় না। তার বুদ্ধিমত্তা, রম্যরস দু এক পুরুষ আগে বইয়ের গল্প শুনতেন ঠাকুরমার কাছ থেকে, তারও আগে মুখে মুখে ঘুম পাড়ানোর গল্প শোনানো হতো। আর এখন? টু ডি ছেড়ে, থ্রিডি, ফোরডি অ্যানিমেশন কার্টুন এন্ড্রয়েড সেটে গোপাল ভাঁড়ের মজার ভিডিও, বাচ্চাদের দুষ্টুমি ঠেকাতে, অন্য বায়না থামাতে, খাওয়াতে, ঘুম পাড়ানো র কাজে পরিবারের বড়রা এ কৌশল ব্যবহার করে থাকেন।
তার অস্তিত্ব সম্পর্কে অনেক ঐতিহাসিক ভাষাবিদদের মধ্যে দ্বিমত আছে। অনেকেই মনে করেন এটি একটি কাল্পনিক চরিত্র। কৃষ্ণনগরে গোপাল ভাঁড়ের জমি বা অন্য কোন রেকর্ডে এ ধরনের নাম পাওয়া যায়নি।
তবে ২০১৪ সালে কলকাতা বইমেলায় তার পরিবারের দুজনকে উপস্থিত করা হয়েছিল। ১৯২৯ সালে নগেন্দ্র নাথ দাস তার লেখা একটি বই তে গোপাল ভাঁড় সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য প্রমাণ হিসেবে বর্ণনা করেন। ঐতিহাসিক ভাষাবিদ সুকুমার সেন বলেন সংস্কৃত শব্দ “ভান্ডার”এর ভন্ড জাত এর অপভ্রংশ “ভাঁড়”।
কৃষ্ণচন্দ্র রাজার পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম সূত্রে জানা যায় সেই সময় কার বিভিন্ন তৈলচিত্রে, গোপাল ভাঁড়ের ছবি আজও বিদ্যমান। নগেন্দ্র নাথ দাস এর মতে গোপালের পদবী ছিল “নাই” মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র “হাস্যর্ণব” পদবী উপাধি হিসেবে দান করেন।
অতীত যাই হয়ে থাকুক, আগামীতে কচিকাচাদের মধ্যে সারা জীবন অস্তিত্ব থাকবে গোপাল ভাঁড়ের একথা বলা বাহুল্য।
সে কথা মাথায় রেখেই কৃষ্ণনগরের কারবালার মাঠে গোপাল ভাঁড় মেলা কমিটির উদ্যোগে কৃষ্ণনগর পৌরসভা ও ক্লাব রক্তজবার সহযোগিতায় ২৮ শে ফেব্রুয়ারি থেকে ৩রা মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হলো গোপাল ভাঁড় মেলার আয়োজন করা। প্রতিদিন চলে বিভিন্ন রকম প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান । কচিকাঁচারা বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ।
মাঠ ভরে চলে মেলার পসরা। অভিভাবকদের সঙ্গে ছোট ছোট বাচ্চাদের ছিল চোখে পড়ার মতো । মেলার মধ্যেই রাজসভার একটি দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল। এরকম একটি সুন্দর মেলায় মেলায় খুশি কৃষ্ণনাগরিকেরা ।