মানব মন্ডল : ধর্মের বরপুত্র লাউসেনকে কানাড়া মনে মনে ভালবাসেন। শিমুলানিবাসী রাজা হরিপালের কন্যা কানাড়া পরমা সুন্দরী ছিলেন। কিন্তু তাঁকে বিবাহের প্রস্তাব পাঠান গৌড় সম্রাট ধর্মপাল। গৌড়রাজ তখন বৃদ্ধ। পাকা চুল,দাড়ি,গোঁফ। নড়বড়ে দাঁত। ধর্মপালের অবস্থার কথা কানাড়ার কানে গেল। কানাড়া বিষন্ন হলেন। পিতা হরিপালের এ বিয়েতে কোন আপত্তি নেই কিন্তু কানাড়া মোটেই প্রসন্ন নন। বিবাহের প্রস্তাব বহনকারী ভাটকে অপমান করে কানাড়া তাড়িয়ে দিলেন। অপমানিত ধর্মপাল হরিপালের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ডাক দিলেন। ক্ষুদ্র রাজ্যের রাজা হরিপাল বিমলা নদী বেয়ে পালিয়ে গেলেন বাসডিঙ্গার গড়ে। কিন্তু কানাড়া হার মানলেন না। অপূর্ব রণসজ্জায় সুসজ্জিত হয়ে রাজা ধর্মপালের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেন। কানাড়ার রণসজ্জা দেখে ধর্মপাল থমকে দাঁড়ালেন। কানাড়া যথাযোগ্য সম্মানের সাথে গৌড়সম্রাটকে জানালেন তাঁর পণের কথা। কি সেই পণ? একটি লোহার তৈরী বৃষকে তরবারীর এক কোপে যে বীর দ্বিখন্ডিত করতে পারবেন সেই বীরকেই তিনি বরমাল্য প্রদান করবেন।
বৃদ্ধ ধর্মপাল জেদের বশে লৌহনির্মিত বৃষের গায়ে দিলেন এক কোপ। বলাই বাহুল্য, তিনি ব্যর্থ হলেন। তাঁর কান্ডকারখানা দেখে সকলের মধ্যে হাসির রোল উঠল। রাজা তখন খবর দিলেন সেনাপতি লাউসেনকে। ধর্ম ঠাকুরের বরপুত্র লাউসেন তরবারীর এক কোপে বৃষকে দ্বিখন্ডিত করলেন। অবশেষে কানাড়া ও লাউসেনের মহামিলন ঘটল। সেই শিমুলা আজকের হুগলী জেলার হরিপাল। আর বাসডিঙ্গা আসলে অধুনা বাসুড়ি নামক একটি গন্ডগ্রাম। ভলেন্তনীয় দিবসে রাঢ় বাংলার এই দুই যুগলের একটু স্মৃতিচারণ করলাম। আশা করি নীতিপুলিশগণ মনক্ষুণ্ণ হবেন না।