মলয় দে নদীয়া:- গতকাল সন্ধ্যায় চড়ক দেখতে গিয়ে বাড়ির তালা ভেঙে দুঃসাহসিক চুরি তুই জায়গার চারটি পরিবারে । ঘটনা নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জের তারকনগর হল্ট স্টেশন এলাকায় । প্রথম যে বাড়িটির চুরি হয়েছে খবর ছড়িয়ে পড়ে তিনি হলেন পেশায় ব্যবসায়িক রামচন্দ্র ঘোষ । তার পরিবারের লোকজন আনুমানিক সন্ধ্যে সাড়ে ছটা নাগাদ তারক নগর হল্ট স্টেশনের পাশেই চড়ক দেখতে গিয়েছিলেন পরিবারের সকলকে নিয়ে । সাড়ে সাতটা নাগাদ বাড়ি ফিরে দেখেন বাড়ির তালা ভাঙ্গা । ঘরের মধ্যে গিয়ে দেখে আলমারি সহ খাট ড্রেসিং টেবিলও ভাঙ্গা অবস্থায় পড়ে রয়েছে । এমনকি ঘরের মধ্যে একটা বড় ধারালো বটি রাখা রয়েছে বিছানায় ।
রামচন্দ্র ঘোষের বৌমা পলি ঘোষ বলেন আমার প্রায় পাঁচভড়ী সোনার গহনা ছিল সর্বস্ব নিয়ে গেছে। পাশাপাশি রঞ্জিত বিশ্বাস তারক নগরের বাজারের দোকান রয়েছে তিনি দোকানে ছিলেন । বাড়ির কাছে চড়ক হচ্ছে বলে রঞ্জিতবাবুর স্ত্রী এবং বৌমা সহ সবাই গিয়েছিলেন চড়ক দেখতে । তিনি সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ বাড়ি ফিরে দেখেন তার বাড়ির ও তালা ভাঙ্গা । ঘরে ঢুকে দেখেন সমস্ত আলমারির শোকেস ভাঙ্গা এবং ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে । রঞ্জিত বাবু বলেন আমার বাড়ি থেকে প্রায় ১৫ ভরি সোনার গহনা ও নগদ কুড়ি হাজার টাকা ছিল সবই নিয়ে গিয়েছে চোরেরা । রঞ্জিতবাবুর বাড়ির সংলগ্ন শ্যামল বালার বাড়ি ।তিনি পেশায় কৃষক । তিনিও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চড়ক দেখতে গিয়েছিলেন । তিনি বাড়ি ফিরে দেখেন তার বাড়ির তালা ভাঙ্গা এবং ঘরে দেখেন সমস্ত আলমারি সহ জিনিসপত্র তছনছ হয়ে রয়েছে । তিনি বলেন আমার প্রায় তিন ভরি মত সোনার গহনা ছিল সেগুলো নিয়ে গেছে ।পাশাপাশি শ্যামল বাবু বলেন আমি একজন কৃষক মাঠে পাট লাগানোর জন্য ৪০ হাজার টাকা রেখেছিলাম বাড়িতে। তার মধ্যে কিছুটা জমি চাষের জন্য ব্যবহার করেছি বাকি ২৬ হাজার টাকা বাড়িতে ছিল সর্বস্ব নিয়ে গেছে চোরেরা । সামনে পাট চাষ করবেন কিভাবে পাট চাষ করবেন তা ভেবে উঠতে পারছেন না । স্থানীয় বাসিন্দা পরিমল বালা বলেন সন্ধ্যাবেলায় পরপর চারটি বাড়িতে চুরি হওয়ায় আমরা আতঙ্কে রয়েছি, পাশাপাশি তিনি বলেন গতকাল সন্ধ্যেবেলায় কৃষ্ণগঞ্জের সমস্ত জায়গাতে বিদ্যুৎ থাকলেও শুধুমাত্র আমাদের এই স্থানটি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল । পরে জানতে পারি পাওয়ার হাউসে কাজ করার জন্যই বন্ধ রয়েছে । তারক নগর এলাকায় এত বড় চরক মেলা অথচ বিদ্যুৎ দপ্তর থেকে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখায় স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশ্ন করছেন তবে কি এই চোরেদের সাথে যোগসাজক ছিল পাওয়ার হাউস কর্তৃপক্ষের । পরিমল বাবু বলেন অথচ স্থানীয় বাসিন্দারা যখন কৃষ্ণগঞ্জ থানায় ফোন করে ব্যাপারটা জানান তার দু মিনিটের মধ্যেই এলাকার বিদ্যুৎ চলে আসে । তারা দাবি করছেন এটা তদন্ত করে দেখা হোক । কৃষ্ণগঞ্জ থানায় প্রতিটি পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের বাড়ির চুরির সমস্ত ঘটনা জানানো হয়েছে । তদন্তে নেমেছে কৃষ্ণগঞ্জ থানার পুলিশ । এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ । এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।