মলয় দে নদীয়া :- প্রকৃতি যেমন মেঘের ছবি আঁকছে কাশফুলের তুলি দিয়ে, মৃৎশিল্পীরা মৃন্ময়ী মূর্তিকে চিন্ময়ী রূপ দিতে চলেছেন। সমস্ত উৎসবমুখর বাঙালি তাদের নিজ নিজ কাজ দ্রুত শেষ করে প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন শারদীয়ার। পুজো মানেই নতুন পোশাক, বেহিসাবি খরচ, বাঁধন হীন ঘোরা বেড়ানো, মনের চাহিদায় খাওয়া-দাওয়া, বেলাগাম উচ্ছ্বাস আরো কত কি! তবে হ্যাঁ, প্রস্তুতির প্রথম পর্ব অবশ্যই পোশাক। যে পোশাকে থাকবে উৎসবের ছোঁয়া।
নদীয়ার শান্তিপুর শহরের নিশ্চিন্তপুর এলাকার সোনা শর্মা পেশায় একটি বিদ্যালয়ের অস্থায়ী অংকন শিক্ষক ! বাড়িতেও ছবি আঁকা শেখান তিনি। করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ দু বছর ধরে, ভাটা পড়েছে আয় উপায়ে! বাংলা ইংরেজি নববর্ষ , দোলউৎসব, বড়দিন, রাখি, ভাইফোঁটা, দুর্গাপূজা নানান ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানের আবেগকে কাজে লাগিয়ে পোশাকে রং তুলি দিয়ে ফুটিয়ে তোলেন উৎসবের মেজাজ,সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে বিপণনের ব্যবস্থা করেন তিনি। ছাত্রদের মধ্যে সহযোগিতার ভিত্তিতে 15 জনের নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সোনাবাবু বলেন, মেয়েদের শাড়ি কুর্তির মতই পুরুষদের সমান চাহিদা পাঞ্জাবিতেও। বিশেষত দুর্গাপূজার সময়, এ প্রজন্মের ছেলেরা সাবেকিয়ানা ফিরিয়ে আনতে চায়, আর সেই আবেগকে কাজে লাগিয়ে রংবেরঙের সুতির পাঞ্জাবির উপর দুর্গা ঠাকুরের ছবি, স্বস্তিক চিহ্ন শরতের আকাশ,মন্ত্র লেখার মতো নানান অভিনব ডিজাইন মন কেড়েছে ক্রেতাদের। ফলে গত বছরের থেকে এ বছরে পাঞ্জাবি অর্ডার বেড়েছে অনেকটাই। কাপড়ের গুণগত মান ,সাইজের উপর নির্ভর করে 300 থেকে 1000 টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন ডিজাইনের পাঞ্জাবি।
অন্যদিকে কয়েক বছর আগে শাড়িতে দুর্গামায়ের মুখ স্বস্তিক চিহ্ন এবং বিভিন্ন মন্ত্র লেখা বিষয়গুলো জনপ্রিয় হলেও, নানান বিতর্কের এড়িয়ে কুর্তি ব্লাউজ বিছানার চাদর এমনকি ঘরের পর্দা পর্যন্ত , উৎসবের ছোঁয়া লেগেছে।
আর এর ফলেই এ প্রজন্মের অঙ্কন শিল্পীরা চাকরির আশা ছেড়ে মন দিয়েছেন এই পেশায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার।
অঙ্কন শিল্পী সহেলি দাস, জানাচ্ছেন তিনি স্নাতক হওয়ার পরেও নিয়মিত চাকরির পরীক্ষা দিয়েছিলেন কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী সে আশা ভরসা ভুলে এখন নিজে পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন, অঙ্কন শিক্ষক সোনা শর্মার পরামর্শ অনুযায়ী। তিনি বলেন সারাদিনে সামান্য কিছু সময় ব্যয় করে, এখন মাসে ৩০০০ টাকার কাছাকাছি রোজগার করতে পারছেন অনায়াসে, সময় এবং পরিশ্রম বাড়িয়ে দিলেই বাড়বে রোজগারও।