অভিজিৎ হাজরা, আমতা, হাওড়া :- গ্ৰামীণ হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া উত্তর বিধান সভা কেন্দ্রের আমতা ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির সিরাজবাটি গ্ৰাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ” সোমেশ্বর – সন্তোষনগর মৈত্রী সংঘ ” ময়দানে অনুষ্ঠিত হল দু ‘ দিবসীয় দিবা – নিশি নক আউট ক্রিকেট প্রতিযোগিতা।২৪ বছর আগে আমতা থানার ” সন্তোষনগর ন্যাশনাল ক্লাব ” সর্বপ্রথম আমতার মধ্যে দিবা – নিশি নক আউট ক্রিকেট প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল। পরবর্তী সময়ে ” সন্তোষনগর ন্যাশনাল ক্লাব ” নাম পরিবর্তন করে। ক্লাবের নতুন নাম করণ হয় ” সন্তোষনগর স্পোটিং ক্লাব ” । ক্লাবের নাম পরিবর্তন হলেও খেলা চালানোর ধারাবাহিকতা আজ ও অব্যাহত আছে। এবারে এই খেলার রজত জয়ন্তী বর্ষে লালমোহন ঘোষ এবং সচীদানন্দ দাস এবং বিথিকা দাস উইনার্স এবং রানার্স ট্রফি, জয়দেব সাউ মেমোরিয়াল ফেয়ার প্লে ট্রফি, সন্ন্যাসী ধাড়া এবং প্রমিলা ধাড়া এবং অনিল কুমার কাঁড়ার মেমোরিয়াল উইনার্স এবং রানার্স বরগুনা ট্রফি প্রদান করা হয়। দু ‘ দিবসীয় দিবা- নিশি নক আউট ১৬ দলীয় ক্রিকেট প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হল ” সোমেশ্বর – সন্তোষনগর মৈত্রী সংঘ ” ময়দানে সন্তোষনগর ” স্পোটিং ক্লাব ” এর পরিচালনায়।” সোমেশ্বর – সন্তোষনগর মৈত্রী সংঘ ” ময়দানের পঞ্চাশ ফুট দূরত্বে এক দিক দিয়ে বয়ে চলেছে দুঃখের নদ ‘ দামোদর ‘ , অপর দিক দিয়ে বয়ে চলেছে রাণী রায় বাঘিনী ভবশঙ্করী স্মৃতি বিজড়িত ” রণ নদী ” । যা বর্তমানে ” মান্দারিয়া খাল ” নামেই পরিচিত। এই মাঠেই দু ‘ দিবসীয় দিবা – নিশি ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় ক্রিকেটারা যেমন তাদের পারদর্শীতা দেখালো,তেমনি হাজার হাজার দর্শক খেলা দেখায় মেতে ওঠে। চূড়ান্ত পর্যায়ের খেলায় উপস্থিত ছিলেন উলুবেড়িয়া উত্তর বিধান সভা কেন্দ্রের বিধায়ক ডাঃ নির্মল মাজী, আমতা কেন্দ্রের বিধায়ক সুকান্ত পাল, হাওড়া জেলা পরিষদ এর কর্মাধ্যক্ষ বিমল দাস, আমতা ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জয়শ্রী বাগ, পঞ্চায়েত সমিতির বিভিন্ন কর্মাধ্যক্ষবৃন্দ, বিভিন্ন গ্ৰামের পঞ্চায়েত সদস্য – সদস্যাবৃন্দ। এই খেলায় উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি ছিল মোহনবাগান ক্লাবের সহ – সভাপতি বিশিষ্ট সমাজসেবী অসিত চ্যাটার্জী, বিশিষ্ট অর্থপেডিক চিকিৎসক সুজয় কুন্ডু, বিশিষ্ট সমাজসেবী বাণীব্রত কাঁড়ার, অভিনেত্রী চান্দ্রেয়ী ঘোষ প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। মোহনবাগান ক্লাব এর সহ – সভাপতি সমাজসেবী অসিত চ্যাটার্জী বলেন, ” এই ক্রিকেট টুর্নামেন্ট খুব বড় মাপের খেলা। এই এলাকার মানুষের কাছে এই টুর্নামেন্ট খুবই জনপ্রিয়। আগামী দিনে একটি ক্রিকেট কোচিং সেন্টার এখানে খোলার ইচ্ছা আছে। যেখানে আগামী দিনে এখানকার প্রতিভাবান ছেলে – মেয়েরা কোলকাতার খেলার মাঠে খেলার সুযোগ পাবে। এমনকি কোলকাতার ভালো প্রতিভাধর খেলোয়াড়রা ও এই মাঠে ক্রিকেট কোচিং সেন্টারে এসে প্রশিক্ষণার্থী খেলোয়াড়দের পরামর্শ দেবেন।এই কোচিং সেন্টার চালানোর জন্য যা টাকার প্রয়োজন হবে সেটা আমি দেবো। আমার ছেলে তন্ময় চ্যাটার্জী ভালো ক্রিকেট খেলে,সেও এই ক্রিকেট কোচিং সেন্টারে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য আসবে ” ।চূড়ান্ত পর্যায়ের খেলার শুরুতেই ছোট ছোট কলাকুশলীদের নৃত্য ও খেলার ২৫ তম বর্ষের আতসবাজির রোশনাই দর্শকদের উচ্চ প্রশংসিত হয়। চূড়ান্ত পর্যায়ের খেলাটি অনুষ্ঠিত হল হাওড়ার পি পি মেমোরিয়াল এবং বাগনান এর ময়ূরশ্রী একাদশ দলের মধ্যে। টানটান উত্তেজনার মধ্যে পি পি মেমোরিয়াল বিজয়ী হয়। হাওড়ার পি পি মেমোরিয়াল,বাগনান ময়ূরশ্রী একাদশ কে ছয় উইকেটে পরাজিত করে। প্রথমে ব্যাট করে বাগনান ময়ূরশ্রী একাদশ পাঁচ ওভারে তিন উইকেটের বিনিময়ে তেষট্টি রান করে। টানটান উত্তেজনায় হাওড়ার পি পি মেমোরিয়াল ম্যাচের শেষ ওভারের শেষ বল বাকি থাকতেই চার উইকেটের বিনিময়ে চৌষট্টি রান করে। বিজয়ী হাওড়ার পি পি মেমোরিয়াল দলকে সুদৃশ্য ট্রফি ও নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা এবং বিজীত বাগনান এর ময়ূরশ্রী একাদশ কে সুদৃশ্য ট্রফি ও নগদ তিরিশ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এছাড়াও বিভিন্ন দলকে অন্যান্য ট্রফি প্রদান করা হয়। চূড়ান্ত পর্যায়ের খেলার দুটি দলের খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত পুরষ্কার, খেলায় উল্লেখযোগ্য পারদর্শীতার জন্য পারদর্শী খেলোয়াড় সম্মান পুরষ্কার দেওয়া হয়। অন্যান্য দলের পারদর্শী খেলোয়াড়দের ও পারদর্শী খেলোয়াড় সম্মান পুরষ্কার দেওয়া হয়। চূড়ান্ত পর্যায়ের খেলায় চব্বিশ রান করে ‘ ম্যান অব দ্যা ম্যাচ খোলোড়ায় সম্মানে সম্মানিত হন হাওড়ার পি পি মেমোরিয়াল দলের জিতু ।আর টুর্নামেন্টে ছয়টি উইকেট নিয়ে ‘ ম্যান অব দ্যা সিরিজ খেলোয়াড় সম্মানে সম্মানিত হন রাজু। এই খেলায় দু ‘ দিন ব্যাপী ধারাভাষ্য প্রসঙ্গে বিশিষ্টজনরা বলেন,” মাতৃভাষা রক্ষার্থে বাংলাদেশ ও আসাম এর শিলচর এর ভাষা রক্ষা আন্দোলনকারীরা রক্ত জড়িয়েছেন,প্রাণ ও বিসর্জন দিয়েছেন। কয়েকদিন আগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রাজ্য সহ আমতায় পালিত হয়েছে। মাতৃভাষা যে আজ ও অবহেলিত তা অনুষ্ঠান কর্তারা ও তাদের খেলার দু’ দিন ব্যাপী ধারাভাষ্যে প্রমাণ করলেন।দু ‘ দিন ব্যাপী খেলার ধারাভাষ্যে পঁচানব্বই শতাংশ সময় ব্যায় করা হয়েছে হিন্দিতে ধারাভাষ্য দিয়ে। সন্তোষনগর স্পোটিং ক্লাব সহ অন্যান্য ক্লাব কর্মকর্তাদের কাছে বিশিষ্টজনদের আবেদন পরবর্তী সময়ে, পরবর্তী বছর গুলিতে খেলার ধারাভাষ্য মাতৃভাষাকে সম্মান জানিয়ে সর্বক্ষণ বাংলায় দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক ” ।
