দেবু সিংহ, মালদা ঃ চাঁচল থানার পাহাড়পুর গণ বিবাহের আসর। মঙ্গলবার ৩০ যুগল দুঃস্হ চার সম্প্রদায়ের পাত্রীকে পাত্রস্থ করা হল এই গণ বিবাহের আসরে। যুক্তরাষ্ট্রীয় আল- ইসলাহ ট্রাস্টের উদ্যোগে এই গণ বিবাহের আসর বসেছিল মালদহের চাঁচলের পাহাড়পুর এলাকায়।
হিন্দু,মুসলিম,সাওতাল ও খ্রিস্টান এই চার সম্প্রদায়ের ত্রিশ জোড়া পাত্র পাত্রীর বিয়ের সমস্ত দায়িত্ব নিয়ে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সকলকে বিয়ে দিলেন ট্রাস্টের সভাপতি লন্ডন থেকে আগত হাজী আব্দুল্লাহ খেপরাওয়াল। পাহাড়পুরের একটি আমবাগান জুড়ে তৈরী হয়েছিল সুদৃশ্য প্যান্ডেল। একই প্যান্ডেলে বিবাহের মন্ডপ তৈরী করা হয়েছিল প্রত্যেক যুগলের জন্য। এই গণ বিবাহের আসরে বিয়ে হল সিঙ্গিয়ার রঞ্জন মন্ডলের সঙ্গে সোনালি দাসের। এভাবেই বিয়ে সম্পন্ন হল সকল যুগলের ।
গণ বিবাহের সমস্ত প্রস্তুতি নিজেই তদারকি করেছেন সকাল থেকে পরিচালক মাহাফুজ আলম। বিয়ের আসরে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মগুরু অরুণ জ্যোতি ভিক্ষু। এদিন নব দম্পতিকে আশীর্বাদ করতে ব্যস্ত লক্ষ্য করা যায় চার সম্প্রদায়ের ধর্মগুরুদের। ট্রাস্টের প্রেসিডেন্ট হাজী আব্দুল্লাহ খেপরাওয়াল বললেন, আমি যত্ন সহকারে নিজের বাবার মতো এই মেয়েদের বিয়ে দিচ্ছি । বিয়েতে প্রয়োজনীয় সব কিছুই নব দম্পতিকে দেওয়া হচ্ছে । নব দম্পতিদের সংসার গুছিয়ে নিতে দেওয়া হল মেয়ের মঙ্গলসূত্র, সোনার আংটি, মেয়ের শাখা, পলা, নোয়া থেকে শুরু করে প্রত্যেক দম্পতিদের জন্য খাট, ড্রেসিং টেবিল, বিয়ের সাজ পোশাক, তত্ত, বাসনপত্র সহ সেলাই মেশিন ও বিভিন্ন রকমের সামগ্রী উপহার।
এই গণবিবাহের আসরে উপস্থিত নব বিবাহিতদের আত্মীয়রা সকলেই উপস্থিত ছিলেন । আল- ইসলাহ ট্রাস্টের উদ্যোগে আয়োজিত গণ বিবাহ কর্মসূচিকে প্রশংসা করেছেন চাঁচল থানার বাসিন্দারা। পরিচালক মাহাফুজ আলম জানালেন, গণ বিবাহের আসরে প্রায় ০৩ হাজার আমন্ত্রিতদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে । এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা বৌদ্ধ ধর্মগুরু অরুণ জ্যোতি ভিক্ষু বলেন, এই গণ বিবাহ, যেখানে সব ধর্ম বর্ণ ভাষা মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে । যারা দেশের সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায়, যারা দেশের বিভাজন করতে চায় তাদের দেশের মানুষ ক্ষমা করবে না।
আমরা দেশের সম্প্রীতি রক্ষাকারী সংস্হা গুলিকে মনের গহ্বির থেকে সাধুবাদ জানায়।