মলয় দে নদীয়া:- পরিবেশের বার্তা নিয়ে দেশ ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যুবক রওনা দিয়েছিল সাইকেলে…
৪১৫ দিনের মাথায় ফিরে আসতে হলে প্রায় হেঁটে। শিক্ষক দিবসের দিন মারাত্মক থেকে শেখার অভিজ্ঞতা যুবকের। নদীয়া শান্তিপুর শহরের ২২ নং ওয়ার্ডের নবীন পল্লীর বাসিন্দা রাজিব কুমার রায়। ২০২৩ সালে গোটা ভারতবর্ষ ভ্রমণের জন্য নিজের সাইকেল নিয়ে বের হয় সে তার বাড়ি থেকে। পরিবেশের বিভিন্ন বার্তা সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়াই এই ভ্রমণের মূল উদ্দেশ্য ছিল তার। তবে দুঃখের বিষয় এই সমাজে বিধি ব্যবস্থা কিংবা আবেগের প্রথম দিকে দাম থাকলেও শেষের দিকে সেই দাম হয়তো থাকে না। অথচ পুলিশ প্রশাসন সহ সকলকে জানিয়ে এবং তাদের অনুমতি নিয়ে সে গোটা ভারত সাইকেলে ভ্রমণ করার জন্য রওনা দিয়েছিল, ভ্রমণ করতে করতে অন্ধ্রপ্রদেশে যাওয়ার পর এক অবসরপ্রাপ্ত সৈনিকের সঙ্গে তার আলাপ হয়। তার বাড়ির ভেতর থেকেই এরপরেই হঠাৎ তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন এবং সাইকেল চুরি হয়ে যায়। এরপর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তার। তবে এর থেকে বড় কথা ভারাক্রান্ত মন নিয়ে যখন স্থানীয় থানায় এসে অভিযোগ জানায়। তবে ওই অবসরপ্রাপ্ত সেনা তাকে একটি সাইকেল কিনে দেওয়ার কথা বললেও, তা সময় সাপেক্ষ। জেনে ভারাক্রান্ত মন নিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছানোর আগেই ১৬ হাজার কিলোমিটার পথ সাইকেল রাইড করে তাকে ফিরে আসতে হল নিজের বাড়িতে। যদিও তার ভারত ভ্রমণের প্রায় অর্ধেকের বেশি সম্পন্ন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সাইকেল চুরি হওয়ার পর কিছুটা ট্রেনে ভ্রমণ এবং শেষমেষ পায়ে হেঁটেই বাড়ি ফিরছে ওই যুবক। নদীয়ার ফুলিয়ায় একটি রাইড সংস্থা তাকে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে।
যুবক জানায়, ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন জায়গায় ঘোরা এবং সেখান থেকে কিছু জ্ঞান অর্জন করার ইচ্ছে বরাবর ছিল তার। দিনটি ছিল ২০২৩ সালের জুলাই মাসের ১৯ তারিখ, বাড়ি ফিরছি আর আমি ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৫ তারিখ। সম্পূর্ণ যাত্রাটি আমি করেছিলাম ৪১৪ দিনের। বেশ কিছু জায়গা সম্পূর্ণ সাইকেলেই কভার করেছিলাম। যেমন উত্তরাখণ্ড, কাশ্মীর, লাদাখ, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, দিল্লী, রাজস্থান, গোয়া, কর্ণাটক, কেরালা, তামিলনাড়, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা। মোট ১৭ টি রাজ্য মিলে আমি সাইকেল রাইট করেছি ১৬১৯২ কিলোমিটার। এরপর যখন হায়দ্রাবাদ থেকে তেলেঙ্গানা হয়ে উড়িষ্যায় আসতে গিয়ে অন্ধের কাছে এই দুর্ঘটনা।
। তবে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমার আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব সকলের আমার পাশে থেকেছে সেই কারণেই এই যাত্রা আমি সম্পূর্ণ করতে পেরেছি তবে কিছুদিন বাড়িতে থেকে আবারও একটা সাইকেলের ব্যবস্থা করে বেরোতে হবে মাস তিনেকের মধ্যেই”।
যাওয়ার দিনের মতোই এলাকার মানুষের উচ্ছাস ধরা পরল আজও রীতি মতন ব্যান্ড পার্টি বাজনা গলায় জয়মাল্য পরিয়ে সংবর্ধনা দিয়ে, বাড়ি ফেরালো তারা।