রাইফেল শুটিংয়ে ন্যাশনাল খেলবে শান্তিপুরের মোহর

Social

মলয় দে নদীয়া:-আন্ত:বিদ্যালয়েতে বিভিন্ন রকম খেলার কথা আমরা জেনে থাকি। ফুটবল ক্রিকেট কিংবা দাবা, ভলি বিদ্যালয়তে এই খেলা গুলি সকলেরই কাছে পরিচিত নাম। কিন্তু এছাড়াও এমন বেশ কিছু খেলা রয়েছে যেগুলি স্কুলে খেলার ব্যবস্থা তো নেই. ই এমনকি গ্রাম কিংবা মফস্বল এলাকাগুলিতে সেই খেলা প্রশিক্ষণের যথাযথ ব্যবস্থা দেখা যায় না। কিন্তু তবুও অনেক ছাত্রছাত্রী রাই সেই সমস্ত খেলাগুলি বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে দেখে কিংবা বইয়ে পড়ে সেই খেলা শেখার জন্য ইচ্ছে প্রকাশ করে। নিজের এলাকায় না থাকার কারণে দূরবর্তী কোনো জায়গায় গিয়ে অনেক বাধ্যবাধকতার মধ্যে দিয়েই সেই খেলার প্রশিক্ষণ লাভ করে।

ছাত্র ছাত্রীদের খেলা প্রেমি যুবক-যুবতীদের মনের এই সুক্ত বাসনা বাস্তবায়িত করতে নদীয়া জেলায় প্রথম স্পোর্টস ভিলেজ গড়ে উঠেছে চকদিগনগরে। সেই স্পোর্টস ভিলেজেই সম্প্রতি চিরাচরিত খেলা ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের খেলা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে সাঁতার, রাইফেল শুটিং, পিস্তল শুটিং, তীরন্দাজ, জিমনাস্টিক থেকে শুরু করে বক্সিং আরো অনেক কিছু। যেগুলি সচরাচর সব জায়গায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় না তবে গোটা বিশ্বজুড়ে এই ধরনের খেলার আভিজাত্য রয়েছে বহু আগে থেকেই। যার সব থেকে বড় উদাহরণ অলিম্পিক।

শান্তিপুর রাধারানী নারী শিক্ষা মন্দির এর দশম শ্রেণীর ছাত্রী মোহর মোদক গত দু’বছর আগে প্রথম ভর্তি হয়েছিলেন বক্সিং প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য এই স্পোর্টস ভিলেজেই। সেখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে যথেষ্টই সফলতা পায় রাজ্য স্তরে। বক্সিং এর পর আরও একটি অন্যরকম খেলাতে সে প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করে তা হল রাইফেল শুটিং। দু বছর ধরে রাইফেল শুটিংয়ের প্রশিক্ষণ নিয়ে তাতে পারদর্শী হয়ে গত বছর সে ব্রোঞ্জ পদক পায় একটি কম্পিটিশনে। আর এ বছর সে রুপোর পদক অর্জন করে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। এবার সে খেলতে যাবে ন্যাশনালে। খেলার দিনক্ষণ এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া না হলেও ইতিমধ্যেই ন্যাশনালের জন্য সে নির্বাচিত হয়।

নাচ গান আবৃত্তি মোটামুটি সকলেই শেখে এমনকি মোহরও শিখে ছিল তবে এই ধরনের ব্যতিক্রমী খেলা বর্তমানে শুধু সখের বসেই নয় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আরজি কর এবং বিভিন্ন নারকীয় ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মেয়েদের নিরাপত্তার স্বার্থে ক্যারাটে সহ এই সমস্ত খেলা গুলিকেও ছেলে মেয়ে তথা তাদের অভিভাবকেরাও যথেষ্টই গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন। ক্যারাটে বক্সিং কিংবা রাইফেল শুটিং এই সমস্ত খেলা গুলি প্রশিক্ষণ নেওয়ার ফলে শুধু প্রতিযোগিতাই নয় বিশেষ করে মেয়েদের আত্মরক্ষার জন্য বর্তমান পরিস্থিতিতে খুবই ফলপ্রসু।

এ বিষয়ে ওই ছাত্রী মোহর মোদক জানায়, প্রথম থেকে নতুন কিছু যা ধরাছোঁয়ার বাইরে সেই রকমই এমন কিছু আমার ইচ্ছে ছিল। সেটি খেলাধুলা হোক কিংবা পড়াশোনা যেকোন ক্ষেত্রে। এর আগে আমি কিকবক্সিং প্রশিক্ষণ নিয়েছি। এর আগে কি ইনবক্সিংয়ে জেলায় প্রথম হয়েছিলাম। এছাড়া অনেক কিছু শেখার পরেও রাইফেল শুটিংটাই আমার বেশি ভালো লেগেছিল। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে আমার মনে হয় শুধুমাত্র ওই স্কুলে গেলাম সপ্তাহে দু তিনদিন ক্যারাটে শিখলাম সেভাবে করলে হবে না শারীরিক ও মানসিক উভয়দিকেই শক্ত থাকতে হবে সকলের।

মোহরের মা সুদীপ্ত মোদক জানান, ওর ইচ্ছেটাই বড় কথা। ছোটবেলা থেকেই ওর ইচ্ছে ছিল কিছু একটা খেলাধুলা শিখবে এরপর বাবার সঙ্গে ও আলোচনা করে। ওর বাবাই খোঁজখবর নিয়ে মেয়েকে ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি করে দেয়। মেয়ের সাফল্যে খুবই খুশি আমরা আমরা চাই ও আরো এগিয়ে যাক।

আপাতত ১০ মিটার রাইফেল ওপেন সাইট খেলাতেই মনোনিবেশ করেছে সে, আপাতত তার রাইফেলের নল লক্ষ্য স্থির করছে পরবর্তী খেলায় স্বর্ণপদক জেতার।

Leave a Reply