মলয় দে নদীয়া :-ফুটবল ক্রিকেট নিয়ে দেশবাসীর মাতামাতি থাকলেও বহু প্রাচীন আভিজাত্যপূর্ণ খেলা টেবিল টেনিস আজ ধুকছে। শুরু হয়ে গিয়েছে অলিম্পিক। এই অলিম্পিকেও টেবিল টেনিস খেলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে প্রাধান্য পায়। তবে বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা ক্রিকেট ফুটবলেই বছরের বেশিরভাগ সময়টি মেতে থাকে। শীতকালে একটু আধটু ব্যাডমিন্টন খেলার প্রচলন থাকলেও টেবিল টেনিস সেই অর্থে খেলা হয় না। যদিও তার কারণ হিসেবে জানা যায় এই খেলার আনুষাঙ্গিক সরঞ্জামের খরচ অনেক বেশি তাছাড়াও দক্ষ কোচের অভাব।
তবে এবার আসন্ন ৭৭ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে অন্যান্য খেলাধুলাও সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি টেবিল টেনিস কেও সমানভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে শান্তিপুর পাঠচক্র ক্লাব। এবছর তাদের ৬০ তম বর্ষে পদার্পণ করায় তারা সিদ্ধান্ত নেন পুরনো ঐতিহ্যকে পুনরায় ফিরিয়ে নিয়ে আসার। অর্থাৎ ৬০ বছর আগেও সেই সময় রীতি মতন ৫০ থেকে ৬০ জন খেলোয়াড়রা টেবিল টেনিস অনুশীলন করতেন এই ক্লাবের তত্ত্বাবধানেই। যা এখন বর্তমানে প্রায় দেখাই যায় না।
১৯৮৮ সালে ক্লাবের পক্ষ থেকে একটি প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয় শান্তিপুর মিউনিসিপাল উচ্চ বিদ্যালয়ে। তবে তারপরে এই প্রথম ২০২৪ সালে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় বলে জানা যায়। ভারতবর্ষের স্বাধীনতার ৭৭ তম বর্ষ উপলক্ষে তারা বেশ কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ওই ক্লাব। প্রথম দিন অঙ্কন শিল্প, দ্বিতীয় দিন সঙ্গীত এবং নৃত্য পরিবেশনা, তৃতীয় দিন আবৃত্তি ও অন্যান্য শিল্পকলা ইত্যাদি। যদিও বছরের পর বছর পরম্পরা অনুযায়ী তারা এই আয়োজন করে থাকে বলে জানা যায় ক্লাবের সূত্র মারফত। একটি ক্লাবে সারা বছর ধরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান খেলাধুলা ইত্যাদির আয়োজন করা হবে এলাকাবাসীর স্বার্থে এটিই স্বাভাবিক, তবে এখন বর্তমানে ক্লাবগুলি শুধুমাত্র দুর্গাপুজোর আয়োজন ছাড়া তেমন কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কিংবা খেলাধুলার দিকে নজর দেয় না বলেই মনে করছেন একাধিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক শিল্প প্রেমী মানুষেরা। যদিও ব্যতিক্রম হিসেবে দেখছে শান্তিপুর পাঠচক্র ক্লাবকে।
শান্তিপুর পাঠচক্র ক্লাব সেই পুরনো পরম্পরা কে আজও ধরে রেখেছে। আজ যেমন কল্যাণী, গয়েশপুর, চাকদা, শান্তিপুর, রানাঘাট, হরিণঘাটা ইত্যাদি জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন বয়সের ৫০ জন বিভিন্ন বয়সের কিশোর কিশোরী যুবক যুবতী ত এসেছেন এই টেবিল টেনিসে অংশগ্রহণ করতে। শিশুদের পাশাপাশি তাদের অভিভাবকেরাও ক্লাবের এই উদ্যোগে খুবই সাধুবাদ জানিয়েছেন।
সকাল থেকেই এই খেলার আয়োজন করা হয়েছে, দুটি টেবিলে বিভিন্ন বয়সের অনুপাতে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। ছেলে এবং মেয়েদের আলাদা করে তিন ভাগ করে দেওয়া হয়েছে এই খেলার জন্য। খেলা শেষে বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ করা হয়। জানা যায় টেবিল টেনিস অত্যাধিক একটি ব্যয় সাপেক্ষ খেলা। টেবিলের যেমন দাম রয়েছে তার পাশাপাশি টেবিল টেনিস খেলার ব্যাটগুলিও যথেষ্ট ব্যয় সাপেক্ষ বলে জানা যায়। সেই কারণেই অনেকেই এই খেলার আয়োজন করতে পারেন না। তবে শত বাধা-বিপত্তির মাঝেও শান্তিপুর পাঠচক্র ক্লাব এই খেলা পুনরায় চালু করেছে। যে আগামী দিনে আরো বৃহৎ থেকে বৃহত্তর হিসেবে অংশগ্রহণ নেবে বলেই জানা যায় ক্লাব কর্তৃপক্ষ মারফত।