মলয় দে নদীয়া:- নদীয়ার হবিবপুরের মদগোপাল মন্দিরের রথযাত্রা একটি উল্লেখযোগ্য এবং ঐতিহ্যবাহী উৎসব যা স্থানীয় জনগণের মধ্যে বিশেষভাবে জনপ্রিয় জায়গা তৈরি করছে। এই রথযাত্রা উৎসব টি ২ বছর ধরে পালিত হয়ে আসছে এবং এটি স্থানীয় সংস্কৃতি ও ধর্মীয় বিশ্বাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
রথযাত্রা একটি প্রাচীন উৎসব যা ভারত সহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে পালিত হয়ে আসছে রানাঘাটের হবিবপুরের এই উৎসবটি মূলত হবিবপুর মদনগোপাল মন্দির থেকে শুরু হয় শেষ হয় হবিবপুর ক্রিয়া যোগা মন্দিরে।
রথযাত্রার মূল আকর্ষণ হলো রথটি, যা শ্রীজগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার মূর্তি নিয়ে মন্দির থেকে নির্ধারিত পথ ধরে হবিবপুর অধিকাংশ এলাকা ঘুরে হবিবপুর ক্রিয়া যোগা মন্দিরে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। স্থানীয় লোকজন এই রথটি টানতে পেরে নিজেদের ধন্য মনে করেন এবং মনে করেন এটি তাদের জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসবে মনে করে।
এবছর রথযাত্রার আয়োজন বেশ বড়সড় এবং জাঁকজমকপূর্ণ করা হয়। মন্দির কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় বাসিন্দারা মিলিতভাবে এই উৎসবের পরিকল্পনা ও আয়োজন করেন। এই সময়ে মন্দির ও তার আশেপাশের এলাকা সুন্দরভাবে সজ্জিত করা হয়েছিল এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়েছিল। ধর্মীয় হরিনাম সংকীর্তন গান, নৃত্য এবং বাজনা সহকারে মাধ্যমে শ্রীজগন্নাথের জীবন কাহিনী উপস্থাপন করা হয় ও রথের রশিতে টান দিয়ে হাজার হাজার ভক্তরা মাসির বাড়ি উদ্দেশ্য নিয়ে যায় পাশাপাশি ৫ হাজারের অধিক ভক্তদের জন্য প্রসাদের ব্যবস্থা করা হয়।
রথযাত্রা শুধু ধর্মীয় দিক থেকেই নয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে স্থানীয় জনগণের মধ্যে এক ধরনের ঐক্য ও সম্প্রতি দেখা যায়। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ একত্রে এই উৎসব পালন করেন এবং এটি তাদের মধ্যে একটি সামাজিক সংহতির বার্তা বহন করে।
রথযাত্রার শেষে শ্রীজগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার মূর্তি গুনডিচা মন্দিরে আনা হয়। এর কয়েকদিন পরে ‘উল্টোরথ’ উৎসব পালিত হয়, যা সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
হবিবপুরের এই রথযাত্রা স্থানীয় জনগণের জীবনে আনন্দ ও ধর্মীয় অনুভূতির এক অপূর্ব মেলবন্ধন এবং এটি তাঁদের সংস্কৃতির একটি অমূল্য অংশ তৈরি করেছে।