শাশুড়ি মায়ের বয়স ১০০ !  আজও নিয়ম মেনে ৬০ বছরের জামাইয়ের মঙ্গল কামনায় করেন জামাই ষষ্ঠী

Social

মলয় দে নদীয়া :-বয়স ১০০ কাছাকাছি হলেও আজও নিয়ম নিষ্ঠা মেনে বৃদ্ধা করে চলেছেন ৬০ উর্ধ্ব জামাইয়ের ষষ্ঠীর বরণ। নদীয়ার মাজদিয়ার বাসিন্দা ফুলিতা দা, বয়স প্রায় ১০০ কাছাকাছি হতে চলেছে। স্বাভাবিকভাবেই জামাই এর বয়সও ৬০ পেরিয়ে গিয়েছে। তবে বয়স বেড়ে গেলেও বাঙালি রীতিনীতিতে ভাটা পড়েনি এতোটুকুও। আজও প্রতিবছর জামাইষষ্ঠীর দিনে জামাইকে বরণ করার জন্য আসেন তিনি এবং ৬০ ঊর্ধ জামাই ও তার স্ত্রী এবং পুত্রও শাশুড়ি মায়ের থেকে আশীর্বাদ নিতে অপেক্ষা করে থাকেন এই দিনটির জন্য।

সম্পূর্ণ বাঙালি প্রথায় ফুলিতা দেবী বরণ করেন তার জামাইকে। আসনে বসে থাকেন জামাই, এবং তার পাশে স্ত্রী ও পুত্র। এরপর জামাইয়ের সামনে দেওয়া হয় ফলাহার। যার মধ্যে থাকে দই চিড়ে আম কাঁঠাল কলা ইত্যাদি। প্রথমে গঙ্গাজল সহযোগে পান পাতা দিয়ে শাশুড়ি মা তার জামাই ও মেয়েকে করেন বরণ। এরপর ধান দুব্য দিয়ে জামাই এবং মেয়ে এবং তার সঙ্গে নাতিকেও করেন আশীর্বাদ। তারা সকলেই বৃদ্ধা ফুলিতা দেবীর চরম স্পর্শ করে, করেন প্রণাম। এরপর পাঁচ রকমের গোটা ফল কাঁসার থালায় জামাইয়ের হাতে তুলে দেন শাশুড়ি। তারপর তাকে দেওয়া হয় তালপাতার পাখা দিয়ে হাওয়া, যেটি অন্যতম রীতি জামাই ষষ্ঠীর। এরপর নিজের হাতে খাইয়ে দেন জামাইকে দই এবং মিষ্টি।

বছরের পর বছর এভাবেই চলে আসছে জামাইষষ্ঠীর নিয়ম এবং নিষ্ঠা নদিয়ার মাজদিয়ার দাঁ পরিবারে। বৃদ্ধা ফুলিতা দেবী জানান তিনি যতদিন জীবিত থাকবেন এবং তার সামর্থ্য থাকবে ততদিন এই রীতিনীতি পালন করে যাবেন তিনি। শাশুড়ি মায়ের নিজের জামাইয়ের প্রতি স্নেহ ও শ্রদ্ধা দেখে অসম্ভব খুশি ৬০ ঊর্ধ্ব জামাই স্বয়ং বিনয় কুমার পোদ্দার। তিনি জানান ভীষণই ভালো লাগছে আমার, এটি আমার পরম সৌভাগ্য যে এই বয়সেও আমার শাশুড়ি মা জামাইষষ্ঠীর রীতিনীতি পালন করে যাচ্ছেন। তার জন্য আমি কৃতার্থ।

স্বাভাবিকভাবেই জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে খাওয়া-দাওয়ার পর্ব ছাপিয়ে এই বাঙালি অনুষ্ঠানের যে রীতিনীতি আজও বজায় রেখেছেন ফুলিতা দেবী তা সমাজের চোখে স্থাপন করেছে দৃষ্টান্ত।

Leave a Reply