মলয় যে নদীয়া:- নদীয়ার হবিবপুর রেল বাজার সংলগ্ন রাঘবপুর প্রত্যাশা কালী মন্দিরে তিন লক্ষাধিক টাকার সোনা এবং রুপোর অলংকার এবং প্রণামী বাক্স দুঃসাহসিক চুরি, মায়ের প্রাণ প্রতিষ্ঠার ঘট সহ লন্ডভন্ড মন্দির। অথচ মন্দিরেই রয়েছে সিসি ক্যামেরা , ঢিল ছড়া দূরত্বে রানাঘাট থানার অন্তর্গত রাঘবপুর পুলিশ ফাঁড়ি, পাহারাদার হিসেবে বাজার কমিটির নৈশ প্রহরী। এরই মধ্যে ভয়ঙ্কর এই চুরি ঘিরে এলাকায় অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। একদিকে যেমন অত্যন্ত জাগ্রত এই মন্দিরের ভাবাবেগ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে তেমনি ভক্তবৃন্দদের সহযোগিতায় তিল তিল করে মায়ের গা ভর্তি গহনা খুলে নিয়ে চম্পট দিলো দুষ্কৃতীরা। এলাকার লোকজন প্রশ্ন তুলছেন নৈশ প্রহরী এবং পুলিশ ফাঁড়ির ভূমিকা নিয়ে।
রানাঘাট থেকে আগত পূজারী তপন আচার্য বলেন, মনুষ্যত্ব থাকলে মায়ের মন্দিরে এভাবে ক্ষতি করতে পারত না, যেভাবে মন্দির অপবিত্র করেছে, মায়ের গা থেকে গহনা খুলে বেআব্রু করেছে তাতে কলঙ্কিত হয়েছে সমাজ।
প্রত্যাশা কালী মন্দির কমিটির ক্যাশিয়ার প্রীতিশ কুমার দাস বলেন আজ ভোর আনুমানিক ছটা নাগাদ তাকে, প্রথম মন্দিরের সাফাই কর্মী, ফোন করে জানান। তিনি এসে দেখেন গ্রিলের দরজা ভেঙে মন্দির লন্ডভন্ড, মায়ের টায়রা ,টিপ, গলার হার হাতের বালা সহ আরো বিভিন্ন ধরনের সোনার গহনা এমনকি রুপোর ত্রিশূল পর্যন্ত নিয়ে গেছে দুষ্কৃতীরা। যার আনুমানিক মূল্য হবে প্রায় তিন লক্ষ টাকারও বেশি। প্রণামী বাক্স প্রায় চার পাঁচ হাজার টাকা ছিল বলে মনে করছেন তিনি সেটাও উধাও হয়েছে।
মন্দির কমিটির সম্পাদক সুবীর কুমার দে আক্ষেপের সুরে বলেন স্থানীয় বাজার কমিটির উদ্যোগে যে নৈশকালীন পাহারাদারের ব্যবস্থা করা হয়েছে তা কোনো উপকারে লাগেনা, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কাছে রাতে বসে ঘুমায় তারা কখনো মন্দির কিংবা বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখেনা। তিনি হতবাক হয়েছেন মাত্র ১০০ কিলোমিটার এর মধ্যে অবস্থিত রানাঘাট থানার তত্ত্বাবধানে রাঘবপুর পুলিশ ফাঁড়ি অবস্থিত কিন্তু তাদেরকেও কখনো দেখা যায় না রাতে। অথচ এই এলাকায় মদের দোকান সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বন্ধ হলেও প্রায় মধ্যরাত্রি পর্যন্ত থাকে মাতালের কোলাহল সে বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনের কখনো সদর্থক ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়নি।
যদিও বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিকভাবে ফোন করে রানাঘাট থানায় জানালে তারা এসে খতিয়ে দেখে যায়, সিসি ক্যামেরা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা যায় গতকাল প্রায় মধ্যরাতে আনুমানিক দুটো নাগাদ তিন ব্যক্তি মন্দিরের গ্রিল ভেঙ্গে প্রবেশ করে এবং একের পর সমস্ত গহনা মার গায়ের থেকে খুলে নিয়ে তারা চম্পট দেয়। তবে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ অনুযায়ী ওই তিন ব্যক্তিকে সনাক্ত করে পুলিশ প্রশাসন অবিলম্বে তাদের কালী মায়ের সকল গহনা ফেরানোর ব্যবস্থা করুক এমনটাই দাবি মন্দির কর্তৃপক্ষ এবং সকল ভক্তদের।
চুরির ঘটনা নিয়ে সকাল থেকেই যথেষ্ট চাঞ্চল্য মন্দির চত্বরে আশেপাশের বিভিন্ন ভক্ত উপস্থিত হন মন্দিরে। তবে পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশে তদন্তের স্বার্থে ওই সিসি ক্যামেরা থেকে সংগৃহীত ভিডিও ফুটেজ সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া হয়নি আপাতত।