মলয় দে নদীয়া:-রাধামাধবের চন্দন যাত্রা উৎসবকে কেন্দ্র করে মায়াপুর ইসকন পরিণত হল মিলনমেলায়। দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য দেশি ও বিদেশি ভক্তের সমাগম হয়েছে মায়াপুর ইসকন মন্দিরে। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত স্তরের মানুষ রাধামাধবকে যেমন ভোগ দিচ্ছেন, তেমনই বিগ্রহকে কাঁধে তুলে নিয়ে আসছেন প্রভুপাদ সমাধি মন্দিরের পুষ্করিণীতে। সেখানেই নৌকাবিহার করেন রাধামাধব। তাই রাধামাধবকে স্পর্শ করে পুণ্যলাভ করতে মরিয়া ইসকন ভক্তরা দলে-দলে ভিড় করছেম চন্দন যাত্রা উৎসবে।
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে, অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্যলগ্নে শুরু হয়েছে চন্দন যাত্রা উৎসব । ২১ দিন ব্যাপী এই উৎসবে মিলিত হন মায়াপুর ইসকন সহ দেশ-বিদেশের ইসকন-ভক্তরা। মূলত গ্রীষ্মের দাবদাহে থেকে মুক্তি পেতেই মায়াপুর ইসকন সহ বিশ্বের সমস্ত ইসকন মন্দিরে একযোগে পালিত হয় চন্দন যাত্রা উৎসব। তবে মায়াপুর ইসকনে ভক্তদের ঢল নামে। একেবারে মিলনমেলায় পরিণত হয় ইসকন মন্দির চত্বর।
চন্দন শরীরে লেপন করলে শরীর ঠাণ্ডা হয়। তাই রাধামাধবকেও প্রচণ্ড দাবদাহ থেকে মুক্তি দিতে চন্দন যাত্রা উৎসবের ২১ দিন ধরে বিগ্রহের গায়ে চন্দন লেপন করা হয়। এরপর বিকেল হতেই ইসকনের প্রভুপাদ সমাধি মন্দিরের পুষ্করিণীতে নৌকাবিহার করানো হয় বিগ্রহকে। হরিনাম-সংকীর্তন সহ ইসকনের চন্দ্রোদয় মন্দির থেকে রাধামাধবের বিগ্রহ ভক্তদের কাঁধে করে নিয়ে আসা হয় সমাধি মন্দিরের পুষ্করিণীতে। সেখানে সুসজ্জিত নৌকায় করে চলে বিহার। নৌকার মধ্যে হরিনাম-সংকীর্তন সহ আরতিও হয়। আরতি সহকারে নৌকাবিহারের করিয়ে সন্ধ্যার পর আবার বিগ্রহকে ফিরিয়ে আনা হয় মূল মন্দিরে। প্রতিদিন বিকাল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে এই উৎসব। এই মনোরম দৃশ্যের সাক্ষী হতেই বহু মানুষ চন্দন যাত্রা উৎসবে ইসকনে ভিড় করেন বলে জানিয়েছেন রসিক গৌরাঙ্গ দাস।
চন্দন যাত্রা উৎসবে রাধামাধব বিগ্রহকে স্পর্শ করার, কাছ থেকে নৌকাবিহারের দৃশ্য অবলোকন করার পাশাপাশি ভক্তরা তাঁদের প্রিয় প্রভুকে ভোগ নিবেদন করারও সুযোগ পান। তাই প্রভুর সেবার সুযোগ পেতে মরিয়া দেশি-বিদেশি ইসকন ভক্তরা চন্দন যাত্রা উৎসবে ভিড় জমান মায়াপুরে। ভগবানও এই উৎসবের মাধ্যমে ভক্তদের সেবা নিয়ে থাকেন বলে জানিয়েছেন রসিক গৌরাঙ্গ দাস।