চৈতন্য মহাপ্রভুর স্মৃতিবিজড়িত জন্মভূমি নবদ্বীপে তৈরি হচ্ছে চৈতন্য সংগ্রহশালা

Social

মলয় দে নদীয়া:- চৈতন্য মহাপ্রভুর স্মৃতিবিজড়িত জন্মভূমি নবদ্বীপে তৈরি হচ্ছে চৈতন্য সংগ্রহশালা। শহরের উত্তর প্রান্তে প্রাচীন মায়াপুর এলাকায় শ্রী চৈতন্যদেবের জন্মস্থান মন্দিরের ব্যবস্থাপনায় সংগ্রহশালাটি তৈরি করার কাজ শুরু হয়েছে। চৈতন্য স্মৃতি বিজড়িত বৈষ্ণব তীর্থ নবদ্বীপ ধাম বৈষ্ণব ধর্মাবলী মানুষজনের কাছে পবিত্র তীর্থভূমি। ফলে, সারা বছর ধরে দেশ-বিদেশ থেকে অগণিত উৎসাহী দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটে চৈতন্য লীলাভূমি ঐতিহাসিক এই মন্দির নগরীতে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে, নবদ্বীপ ধাম দর্শন করতে এসে শ্রীমন মহাপ্রভুর জীবন কাহিনী ও তাঁর লীলা কর্ম সম্পর্কে অনেক কিছুই তাদের কাছে অজানা থেকে যায় । মূলত সেই সব দর্শনার্থীদের কাছে মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেবের আবির্ভাবের পর থেকে তাঁর সন্যাস জীবন পর্যন্ত জীবন কাহিনী ও লীলা কর্মের ঘটনাবলী মূর্তি ও ছবির মাধ্যমে তুলে ধরার জন্যই তৈরি করা হচ্ছে এই চৈতন্য সংগ্রহশালায়টি বলে দাবি প্রাচীন মায়াপুর জন্মস্থান মন্দির কর্তৃপক্ষের। এই প্রসঙ্গে জন্মস্থান মন্দিরের প্রধান অধ্যক্ষ অদ্বৈত দাস মহারাজ জানান, সংগ্রহশালাটি তৈরির কাজ শুরু হয় করোনা অতিমারির আগে। মাঝখানে কবিড পরিস্থিতির জন্য কাজ বন্ধ ছিল। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ধীরে ধীরে ফের কাজ শুরু হয়। সংগ্রহশালাটি দর্শনার্থীদের কাছে সম্পূর্ণভাবে তুলে ধরতে এখনো প্রায় এক বছরের উপর সময় লাগতে পারে। এখানে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জীবন কাহিনী ও তাঁর জীবন দশায় বিভিন্ন লীলা কর্মের ঘটনা একাধিক মূর্তি ও ছবির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার কাজ চলছে। সংগ্রহশালাটি সম্পূর্ণভাবে তৈরি হয়ে গেলে খুব সহজেই মহাপ্রভুর জীবনী সম্পর্কে দর্শনার্থীরা জানতে পারবেন। সংগ্রহশালাটি সম্পূর্ণ হতে প্রায় ৭ থেকে ৮ কোটি টাকা খরচ হতে পারে। সুদূর উড়িষ্যার কটক থেকে ছয় সাত জন শিল্পী এখানে এসে দিনরাত পরিশ্রম করে মূর্তি তৈরি কাজ করছেন। এর আগেও বহু শিল্পী এখানে এসে মূর্তি তৈরীর কাজ করেছেন। দোল পূর্ণিমার আগে মন্দিরের বাগান শয্যার জন্য সূর্য রথ মূর্তি তৈরীর কাজ চলছে। উড়িষ্যার কটকের বাসিন্দা কাজল নামের শিল্পী জানান, জন্মস্থান মন্দির কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে চৈতন্য সংগ্রহশালার জন্য দেব-দেবীর মূর্তির তৈরীর কাজ করতে পেরে তিনি নিজেকে ধন্য বলে মনে করছেন। এই মুহূর্তে মন্দিরের বাগান শয্যার জন্য সূর্য রথের কাজ চলছে, আগামী দোল পূর্ণিমার আগে কাজটি সম্পন্ন হবে। পরিকল্পনাটি বৃহৎ হওয়ার কারণে সংগ্রহশালাটি সম্পূর্ণভাবে তৈরি হতে এখনো এক বছরের উপর সময় লাগতে পারে। তবে সংগ্রহশালাটি তৈরি হয়ে গেলে মুক্তি ও ছবির মাধ্যমে তুলে ধরা শ্রীমন মহাপ্রভুর ছেলেবেলা থেকে শুরু করে সন্ন্যাস গ্রহণ পর্যন্ত জীবন কাহিনী ও লীলা কর্ম সম্পর্কে দর্শনার্থীরা সবিস্তারে জানতে পারবেন।

ছবি: প্রতীকী

Leave a Reply