হস্তচালিত তাঁতে নিজে হাতে বোনা রামের বনবাস নকশা শাড়ি নিয়ে নদীয়া থেকে অযোধ্যার উদ্দেশ্যে রওনা হবিবপুরের এক তাঁত শিল্পীর

Social

মলয় দে নদীয়া:- হস্তচালিত তাঁতে নিজে হাতে বোনা সীতা মায়ের জন্য রামের বনবাস নকশা শাড়ি নিয়ে নদীয়ার হবিবপুর থেকে দাদাকে সাথে নিয়ে অযোধ্যার উদ্দেশ্যে রওনা হবিবপুরের এক তাঁত শিল্পীর।

আগামী ২২শে জানুয়ারি সেই চিরপ্রতীক্ষিত রাম মন্দিরের উদ্বোধন । প্রায় ৫০০ বছর বাদে আবারো রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা হওয়ার কারণে উচ্ছ্বাসিত সকল ভারতীয় সনাতনীরা। অযোধ্যায় রাম মন্দির স্থাপন উপলক্ষে বছরভোর চলছে নানান আয়োজন।

রাম মন্দির ট্রাস্ট ,রাষ্ট্রীয় স্বয়ংবর সেবক, হিন্দু মহাসভা সহ নানান ধর্মীয় সংগঠন যেমন প্রচারে নেমেছে তেমনি বিজেপির বিভিন্ন শাখা সংগঠন থেকে শুরু করে সাধারণ অরাজনৈতিক মানুষও এই উচ্ছ্বাসে সামিল হয়েছেন। বাড়ি বাড়ি প্রসাদী চাল বিতরণ থেকে শুরু করে, বাড়ির মহিলাদের ঐদিন সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালানোর বার্তা দেওয়া, পুজো চলাকালী বিভিন্ন এলাকায় ভগবত গীতা পাঠ কীর্তন রাম নাম সহ হোম যজ্ঞ নানান ধর্মীয় উপাচার চলবে বলেই জানা গেছে। আর এ সকল কাজে এগিয়ে এসেছে বহু সাধারণ ধর্মপ্রাণ অরাজনৈতিক মানুষজন।

এরকমই এক ভগবান রামচন্দ্রের প্রতি অসম্ভব ভালবাসার নিদর্শন মিলল নদীয়ার হবিবপুরে। সেখানকার হস্তশ চালিত তাঁত শিল্পী পিকুল রায় এক বছর ধরে রামের বনবাস থেকে রাবণবধ পর্যন্ত নানান ঘটনা নিখুত সুতোর বুননে এক বছর ধরে তৈরি তাঁত শাড়ি নিয়ে দাদা অনন্ত রায়ের হাত ধরে সন্ধ্যের ট্রেনে রওনা দিল অযোধ্যার উদ্দেশ্যে।

এ বিষয়ে পিকুল বাবু জানান, তাঁত শাড়ির সংকটজনক পরিস্থিতি হলেও তিনি হাল ছাড়তে নারাজ। ১০ বছর আগে, বাবা অমল রায়ের মৃত্যুর পর তারা দুই ভাই এই হস্তচালিত তার চালিয়েই পরিবারের মুখে দুটো অন্ন জুগিয়েছি। আর এ বিষয়ে মানসিক শক্তি যুগিয়েছেন ভগবান শ্রী রামচন্দ্র। এক বছর আগে যখন এই শাড়ি তিনি প্রথম বুনন শুরু করেন , তখন থেকেই শুনছি রাম মন্দির তৈরি হবে ২০২৪ এ। তাই নাওয়া খাওয়া ভুলে শেষের দিকে জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহতেই সমাপ্ত হয়েছে বুননয়ের কাজ।

তবে কোনো জনপ্রতিনিধি কিংবা নেতা-মন্ত্রী নয় ভগবান রামের কাছে পৌঁছাতে তিনিই ভরসা। তাই পরিবারের সম্মতিতেই বেরিয়ে পড়া। ভগবান যদি চান তাহলে নিশ্চয়ই সীতা মায়ের অঙ্গে উঠবে এই শাড়ি, আর সেই প্রাপ্তি হবে জীবনের সেরা। যদি একান্ত তাও না হয়, তার এই অর্ঘ্য মন্দিরে স্থান পেলেই আমি কৃতজ্ঞ।
দাদা অনন্ত রায় বলেন তারা সনাতনী হিন্দু পরিবার কত মানুষ কত কিছু দান করেছেন মন্দির নির্মাণকল্পে। রোজগার তো সারা জীবনই আছে। যদি ভগবানের কাছে সামান্য এই পরিশ্রমের অর্ঘ নিবেদন করা যায় তার থেকে মহৎ কাজ আর কি হতে পারে! তবে স্বচক্ষে রাম মন্দির উদ্বোধন দেখাও কম সৌভাগ্যের নয় শুধু প্রণাম জানিয়ে সমস্ত হস্তচালিত তাঁত শিল্পীদের পুনরুজীবন ফিরে পাওয়ার প্রার্থনা থাকবে ভগবানের কাছে।
তবে আদৌ কি এই দুই দাদা ভাই তাদের শিল্পকর্ম সীতা মায়ের অঙ্গে শোভা বর্ধন করাতে পারবেন! এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে গোটা নদীয়া সহ পশ্চিমবঙ্গের সকল রাম ভক্তদের কাছে।

Leave a Reply