যুগ যুগ ধরে কুমারী পূজোর প্রচলন নদিয়ার ঐতিহ্যবাহী চাঁদুনী বাড়ির

Social

মলয় দে নদীয়া :-প্রথম কুমারী পুজো প্রচলিত হয় কলকাতার বেলুড় মঠ থেকে, এরপর ছড়িয়ে পড়ে রাজ্য সহ বিভিন্ন জেলায়। নদীয়ার শান্তিপুরের ঐতিহ্যবাহী চাঁদুনী বাড়ির সাবেকি দুর্গাপুজো প্রায় ৫৫০ বছরের প্রাচীন।

জানা যায় দূর্গা পুজোর শুভ সূচনা করেছিলেন বাড়ির বংশধর কাশীনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, তিনি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর গৃহশিক্ষক ছিলেন, আর শান্তিপুরের মাটিতে কাশিনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য পরিচিতির জায়গা করে নেন বরাবরই। নিজের বাড়িতেই শুরু করেন দূর্গা পূজার সূচনা, তারপর থেকেই কুমারী পূজার সূচনা করেন তিনি। বংশধররা জানিয়েছেন, পাঁচ থেকে দশ বছর বয়সী যেকোনো ব্রাহ্মণ ঘরের কন্যা সন্তানকে তারা কুমারী রূপে পুজো করে থাকেন। তবে ষষ্ঠীর দিন থেকে মহাঅষ্টমীর দিনে চিরাচরিত নিয়ম মেনেই বিভিন্ন উপকরণের ভোগ দিয়ে নিবেদন করা হয় দেবী দুর্গাকে। জানা যায়, একটা সময় ছাগ বলি হতো, এখন সময়ের পরিবর্তনে তা বন্ধ হয়ে গিয়ে নিয়ম রক্ষার্থে করা হয় কুমড়ো কলা এবং আখ বলি। তবে চাঁদনী বাড়ির বেশিরভাগ বংশধরেরা কর্মসূত্রে কেউ বিদেশ কেউ বিভিন্ন রাজ্যে থাকেন। আর দেবী দুর্গার পূজার সময় সবাই একত্রিত হয়ে আরাধনা করেন দেবী দুর্গার। তবে চাঁদনী বাড়ির ঐতিহ্যকে বজায় রাখতে এখনো তৎপর বাড়ির মহিলারাও। পূজোর পাঁচটা দিনে বাড়ির পূজো ছাড়া অন্যত্র যাওয়ার সুযোগ পান না তারা। বর্তমান ওই বাড়ির বংশধর প্রণব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাবা ঠাকুরদাদার মুখ থেকে অনেক গল্প শুনেছি, আর সেই মতো এখনো যাতে চিরাচরিত নিয়ম বজায় থাকে সে চেষ্টায় করছি আমরা। তবে দেবী দুর্গা নিরঞ্জনের ক্ষেত্রে একটু ভিন্ন নিয়ম, আরম্ভর এর সাথে দেবী দুর্গার বিসর্জন হয় না। বাড়ির মহিলা এবং বংশধরেরা একত্রিত হয়ে নিরঞ্জনের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাই প্রতিমাকে। তবে নদীয়ার শান্তিপুরের চাঁদুনী বাড়ির এই কুমারী পুজো দেখতে গোটা শান্তিপুর বাসির মধ্যে থাকে এক অন্য আবেগ। মহা অষ্টমীর দিনে দেবীর পুজোর শেষেই শুরু হয় কুমারী পুজো।

Leave a Reply