নজির বিহীন সাফল্য থাকলেও অর্থাভাবে জামশেদপুরে সপ্তম ন্যাশনাল ব্লাইন্ড ফুটবল টুর্নামেন্টে অনিশ্চয়তার মধ্যে বাংলার দল

Social

মলয় দে নদীয়া :- চোখ থাকতেও অন্ধ এই সমাজে , জানেন কি! দৃষ্টিহীনরাও কৃতিত্বের সঙ্গে খেলে ফুটবল?

বিভিন্ন ধরনের বিয়ারিং এর লোহার বল ব্লাডারের মধ্যে পুরে খেলা হয় এই ফুটবল। যা শুধুমাত্র শ্রবণ শক্তির দ্বারা অনুভব করে, নীল আকাশের তলায় সবুজ ঘাসের মাঠ হলেও সম্পূর্ণ অন্ধকারাচ্ছন্ন ভাবেই তারা দেখিয়ে থাকেন কৃতিত্ব। সাধারণ ফুটবল এর ক্ষেত্রে ১১ জন প্লেয়ার থাকলেও এই বিশেষ ধরনের খেলায় সম্পূর্ণ অন্ধ থাকেন চারজন। গোলকিপার এবং গোল গাই ড ক্লিয়ার গাই অপর ২ ব্যক্তি থাকেন আংশিক দৃষ্টিহীন অর্থাৎ মাঠে খেলেন এই মোট সাতজন। ৪০ মিটার লম্বা কুড়ি মিটার চওড়া মাঠে তাদের দাপাদাপি দেখলে আপনার চক্ষু হবে চরক গাছ!
কলকাতার বেহালায় ২০১৭ সালে গড়ে ওঠা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ফর দা ব্লাইন্ড অফ বেঙ্গল সংক্ষেপে FABB মাত্র ৭ জন দৃষ্টিহীন ফুটবলপ্রেমীকে নিয়ে গঠন সৃষ্টি করলেও বর্তমানে ছেলেদের এবং মেয়েদের পৃথক তিনটি করে দল তৈরি করতে সমর্থন হয়েছে তারা। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার দৃষ্টিহীনরা ক্রমশই এগিয়ে আসছেন তাদের খেলা দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে।
যদিও এ বিষয়ে সংগঠনের সচিব গৌতম দে, বলেন সরকারি সদিচ্ছা এবং ক্রীড়া প্রেমী এবং বিশেষভাবে সক্ষমদের শুভাকাঙ্ক্ষীদের সহযোগিতা পেলে, প্রত্যন্ত গ্রাম শহরের দৃষ্টিহীনরা তাদের প্রতিভা দেখাতে পারে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, টাটা জামশেদপুরে সপ্তম জাতীয় ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। যা চলবে আগামী ১৭ই মে থেকে ২০শে মে পর্যন্ত। বিভিন্ন রাজ্যের ছেলেদের 16 টি এবং মেয়েদের বারোটি দল অংশগ্রহণ করতে চলেছে। যার মধ্যে বাংলা অন্যতম। যেহেতু প্লেয়াররা দৃষ্টিহীন তাই চারজন এক্সোর্ট এবং ক্যাপ্টেন সচিব সহ মোট 24 জনের দৃষ্টিহীন ফুটবল দলের প্রতিনিধিদের যাওয়ার, থাকা এবং খাওয়ার অর্থ যোগানের অভাবে, অনিশ্চয়তার মুখে। অথচ এর আগে দুবার ন্যাশনাল এবং পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি খেলায় তাদের দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো।
তাই সচিব গৌতম দে, এই খবর সম্প্রচারের মাধ্যমে শুভাকাঙ্ক্ষী সচেতন নাগরিকদের সহযোগিতা প্রার্থনা করেছেন। তিনি বলেন এ পৃথিবীতে , সকলেরই বাঁচার অধিকার আছে, সকলেই বসুন্ধরার সন্তান। কিন্তু তবুও, বেসরকারি সরকারি উদ্যোগে কোটি কোটি টাকা বিভিন্ন ধরনের ক্রীড়া বিষয়ে ব্যয় করলেও তাদের উৎসাহিত করতে ধৃতরাষ্ট্রের ভূমিকা ।
তবে শত প্রতিবন্ধকতা দূর করে, বিগত দিনে বেশ কয়েকবার বাংলাকে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে উন্নীত করেছেন তারাই। এবারেও সহযোগিতা পেলে, সেই দৃষ্টান্তই রাখবেন তারা।
আমাদের সংবাদ মাধ্যমের পক্ষ থেকে তাদের এই, হার না মানা প্রতিভা কে কুর্নিশ জানাই। নিজেদের সাধ্য মতন, সহযোগিতা করার সাথে, দর্শকদের কাছে অনুরোধ জানাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য।

Leave a Reply