মলয় দে নদীয়া :-সম্প্রতি মোটরসাইকেলে উপর ছোলা ভাঙানো মেশিন নিয়ে দুয়ারে ছাতুর খবর সম্প্রচার করেছিলাম আমরা। সেখানেই, উল্লেখ ছিলো বিহার থেকে আগত , হিন্দিভাষী কয়েকজন ব্যবসায়ী টেক্কা দিয়েছিলো বাঙালিদের। তবে সেই, ধারণাকে ভ্রান্ত প্রমাণ করলেন নদীয়ার শান্তিপুর শহরের এক নম্বর ওয়ার্ডের রামকৃষ্ণ কলোনির বাসিন্দা রঞ্জন অধিকারী।
তার রমরমা কাপড়ের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায় লকডাউনে। ব্যবসায়িক স্থল ভিন রাজ্যে, যাওয়া বন্ধ হয়ে গেলে, দুশ্চিন্তায় পড়েন যথেষ্ট। এরপর লকডাউন উঠে গিয়ে জনজীবন স্বাভাবিক হলে তিনি একটি টোটো গাড়ি কিনে যাত্রী পরিবহনের কাজ শুরু করেন। কিন্তু সংখ্যাক্রমে এতই বেড়ে যেতে থাকলো, একমাত্র মেয়েকে রানাঘাট ইংরেজি মাধ্যম সেন্ট মেরি বিদ্যালয়ে, পড়ানো অনিশ্চয়তার প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড়িয়ে যায়।
তবে তাঁত শাড়ি বিক্রিতে যাওয়া পাটনায় এ ধরনের উদ্যোগ দেখে, দুয়ারে ছাতু, বিষয়টি আকর্ষিত করে তোলে এই কর্মঠ ব্যবসায়ীকে। ৪০ হাজার টাকা দিয়ে মেশিন কিনে বসেন। টোটো গাড়ির উপরে তা বসিয়ে, ভাজা ছোলার বস্তা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন ছাতু বিক্রি করতে। অন্যরা যখন মোটরসাইকেলে, তেল পুড়িয়ে প্রখর রোদ্রে খুব বেশি ঘোরাঘুরি করতে পারছেন না, তিনি টোটো চালিয়ে অনায়াসে পৌঁছে যাচ্ছেন শান্তিপুর শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে। সকাল ৯ টা থেকে দুপুর দুটো বিকেল পাঁচটা থেকে রাত নটা এভাবেই একদিনে নব্বই কেজি ছাতু বিক্রিতে আজ তিনি সফল। অত্যাধিক ভিড় সামলাতে সহযোগী হিসেবে রেখেছেন একজনকেও। গত ৩১শে ডিসেম্বর নতুন এই ব্যবসায় নেবে, এখনো পর্যন্ত শহরের ভিড় ঠেলে গ্রামে পৌঁছাতে পারেননি তিনি। তিনি বলেন, টোটো তে দুটো সুবিধা আছে গ্রীষ্ম বর্ষা সবসময়ই ব্যবসা করা সম্ভব অন্যদিকে, ক্রমবর্ধমান জ্বালানি তেলের থেকেও টোটো তে ইলেকট্রিক চার্জ অনেকটাই সাশ্রয়ী।
সারা বছর এই ব্যবসা চললেও, শীতকালে কিছুটা ভাটা পড়তে পারে, তাই আগেভাগেই নতুন আরেক ব্যবসার পরিকল্পনা করে রেখেছেন তিনি। ১০ চাকি ক্ষমতা সম্পন্ন, এই ভাঙ্গানো মেশিনে, বাড়ি বাড়ি পৌঁছে গৃহস্থের গম ভাঙ্গাবেন তিনি, ভাঙ্গাবেন ঘানি ভাঙানো সরষের তেল। প্রয়োজনে ভাজা জিরে ধনিয়া শুকনো লঙ্কা এবং মটরের ডাল ভাঙিয়ে দেবেন।