মলয় দে নদীয়া :- পশু হাসপাতাল বন্ধ ! বিকেল পাঁচটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত বনদপ্তরের একাধিক নাম্বারে লাগাতার ফোন করেও এলাকাবাসীরা পেলেন না। চোখের সামনে গুরুতর অসুস্থ হনুমানের দগ্ধে দগ্ধে মৃত্যু দেখলো এলাকাবাসী ক্ষোভের সৃষ্টি সরকারি দপ্তরের বিরুদ্ধে।
চরম নির্মম ঘটনাটি ঘটে নদীয়ার শান্তিপুর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাইগাছি বিল পুকুর শনি মন্দির সংলগ্ন এলাকায়।
ওই এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা শান্তি রঞ্জন দেবনাথ বলেন, গতকাল আনুমানিক তিনটে নাগাদ ওই এলাকার এক গৃহস্থ বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়ে একটি রক্তাক্ত অসুস্থ হনুমান। তার ঘাড়ে পিঠে এবং পায়ে কুকুর বা অন্য জাতীয় কোন প্রাণী কামড়ের ক্ষত দিয়ে ঝরছে রক্ত। এই অবস্থায় শান্তিপুর মতিগঞ্জ পশু হাসপাতাল বন্ধ থাকলে, ওই হনুমানটিকে উদ্ধার করার জন্য বনদপ্তরের বিভিন্ন নাম্বারে ফোন করা শুরু করে এলাকার ছেলেরা। কখনো অসুস্থ হনুমানের কথা শুনে কেটে দেওয়া হয় নাম্বার দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু কেউই তৎপর হয়নি প্রাণীটিকে উদ্ধার করতে। এরপর বিট অফিসার এক ম্যাডামের নাম্বার পেয়ে রাত আটটা থেকে নটা এই এক ঘন্টা সময়ের মধ্যে অন্তত পাঁচটা মোবাইল থেকে পনের বার ফোন করা হয়েছে। তিনিও দুই একবার ফোন রিসিভ করলেও, নেটওয়ার্কের দোহাই দিয়ে হ্যালো হ্যালো করে কেটে দিয়েছেন।
যদিও এ প্রসঙ্গে দায়িত্বে থাকা বিট অফিসার জানিয়েছেন গতকাল ছিল রবিবার তাই ল্যান্ড লাইন হয়তো বেজে গেছে। তবে নেটওয়ার্ক খারাপ থাকার জন্য আমার ফোনে দুটি ফোন এসেছিল কিন্তু শোনার আগেই তা কেটে যাচ্ছিলো।
স্থানীয় যুবক বিক্রম দেবনাথ বলেন, ওসব তাদের কর্তব্য এড়িয়ে যাবার অজুহাত, প্রত্যেক ক্ষেত্রেই কল রেকর্ডিং রয়েছে, তা বাদে সরকারি হেল্পলাইন নাম্বারে একবার ফোন করলেই, চলে আসার কথা সেখানে এতবার নানান রকম মোবাইল থেকে ফোন করা হয়েছে, তা কি করে অস্বীকার করেন তিনি? তাহলে সরকারি তহবিলের গঠিত এ ধরনের দপ্তর রেখে লাভ কি? শুধু আজ নয়, এর আগেও আমরা লক্ষ্য করেছি প্রথমে ছবি তুলে পাঠাতে হবে তারপরে ভিডিও তুলে পাঠাতে হবে, এভাবে উনাদের কাজ আমাদের করে দিতে হবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, তারপরে মনে হলে কখনো আসবেন কখনো বা আসবেন না।
ওই এলাকার ওপর এক যুবক বাপি দেবনাথ বলেন, আমাদের ট্যাক্সের টাকায় সরকারি দপ্তর গড়া, তাদের মাইনা থেকে শুরু করে পৌঁছানোর গাড়ি সব কিছুরই টাকা আমরা সাধারণ মানুষ দিয়ে থাকি, কিন্তু সাধারণ মানুষের কোনো মূল্যই নেই তাদের কাছে, কতটা অমানবিক হলে একটা হনুমান হোক বা অন্য কোন প্রাণী মরে যাচ্ছে শুনেও ফোন তোলেন না। মানুষের হোক বা আর অন্য কোনো প্রাণীর প্রাণের মূল্য তো আর আলাদা হয় না?
এলাকার গৃহবধূ উর্মিলা বিশ্বাস বলেন, এর আগে এরকমই এক হনুমান নিয়ে, মতিগঞ্জ মোড়ে অবস্থিত পশু চিকিৎসালয়ে গিয়েছিলাম, সেখানে এ ধরনের কাজের জন্য বাহবা দেওয়া তো দূরে থাক, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। সরকারি দপ্তরের কর্মীদের এ ধরনের আচরণ হলে, উদ্দেশ্য পূরণ হবে কিভাবে?